Subrata Mukherjee: সক্রিয় ভূমিকা ছিল জমি আন্দোলনে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে স্মৃতিমেদুর সিঙ্গুর | Bangla News
সাতের দশকের ছাত্র আন্দোলনের দামাল নেতা। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে লাঠি হাতে নেমেছিলেন চাষের খেত পাহারা দিতে। পরনে ট্রেডমার্ক ধুতি-পাঞ্জাবি আর হাতে বাঁশের লাঠি। সিঙ্গুরের বহু ফসলি জমিতে দাঁড়িয়ে ধানের শিষ ছুঁয়ে দেখছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জমি আন্দোলনের অন্যতম ধাত্রীভূমি সিঙ্গুরের স্মৃতির ঝাঁপি থেকে এখন বেরিয়ে আসছে এমনই সব বিরল ছবি।
সময়টা ২০০৬ সাল। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের একটা সিদ্ধান্তে শান্ত সিঙ্গুর হঠাৎই বদলে যায় আন্দোলনের অগ্নিভূমিতে। বহুফসলি জমিতে টাটাদের একলাখি গাড়ির কারখানা তৈরির সিদ্ধান্ত। তার জন্য ব্রিটিশ আমলে তৈরি জমি অধিগ্রহণ আইন প্রয়োগ। অনিচ্ছুক কৃষক পরিবারের সদস্যদের পিঠে পুলিশের লাঠির বাড়ি। সিঙ্গুরের মাটি তখন গরম। গায়ের জোরে বহুফসলি জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না, অনিচ্ছুকদের পাশে দাঁড়িয়ে এই দাবিতে জোরদার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুব্রত মুখোপাধ্যায় তখন তৃণমূল ছেড়ে সবে কংগ্রেস ফিরেছেন। সিঙ্গুরে কংগ্রেসের জমি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন তিনি। বাজেমেলিয়ার উজ্জ্বল সংঘ ও গোপালনগরের ঘোষপাড়ায় দুটি শিবির করে জমিতে রাতপাহারার ব্যবস্থা করা হয়। পুরোভাগে সুব্রত মুখোপাধায়। পালা করে দুটি শিবিরে কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে রাত জাগতেন তিনি। বাজেমেলিয়ার জমিতেই শিবির করে থাকতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। পোস্ত, পুঁটি মাছের ঝাল আর দিনে অসংখ্যবার চিনি ছাড়া লিকার চা, এই সব খেতেই পছন্দ করতেন নিপাট বাঙালি সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এখনও সেই স্মৃতি আঁকড়ে রেখেছে সিঙ্গুর কংগ্রেস।
এমন এক জমি যোদ্ধার প্রয়াণে শোকাহত জমি আন্দোলনের আরেক সৈনিক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। খবরের কাগজ হাতে নিয়ে মন খারাপ সিঙ্গুরের মাস্টার মশাই ও প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের।
২০০৮ সালে কংগ্রেসে থেকেও, সিঙ্গুরে মমতার ধর্নামঞ্চে যোগ দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজনীতির সব মহলে অবাধ যাতায়াত ছিল তাঁর। সিঙ্গুর আন্দোলনের আরেক নেতা বেচারাম মান্নার সঙ্গেও তাঁর সখ্য গড়ে ওঠে।