সভাপতি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে অটল রাহুল, নিরস্ত করতে বাসভবনের বাইরে অনশন কংগ্রেসিদের, বোঝাতে প্রতিনিধিদল নিয়ে যাবেন শীলা
গতকালই শীলা বিবৃতি দিয়ে বলেন, অতীতেও নানা সময়ে বিপর্যয়ে পড়েছে দল, কিন্তু পাল্টা ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পথে ফিরেছে। ইন্দিরা গাঁধীর গতিশীল নেতৃত্বে কংগ্রেস ১৯৭৭এর লোকসভা ভোটে বিপর্যয় পিছনে ফেলে আড়াই বছর বাদে ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিল, তারপর বেশ কয়েকটা বছর ক্ষমতায় বহাল ছিল।
কর্নাটক কংগ্রেস রাহুলকে আবেদন করেছে, সভাপতি পদ ছাড়বেন না। বলেছে, আমরা হয়তো হেরেছি। কিন্তু আপনার নেতৃত্বে আমাদের আস্থা আছে। ভারতের আপনাকে প্রয়োজন।
প্রেক্ষাপট
নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধী অনড়, কংগ্রেস সভাপতি পদ ছাড়বেনই। পাল্টা দলীয় কর্মীদের একাংশ তাঁকে নিরস্ত করতে আসরে নেমেছেন। তাঁরা তাঁকে সিদ্ধান্ত বদলে রাজি করাতে তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনের বাইরে অনশনে বসেন। রাহুলের তুঘলক লেনের বাসভবনের বাইরে অবস্থানে বসা দিল্লির কংগ্রেস নেতা বিজয় জতন ও কিছু দলীয় কর্মী বলেন, রাহুলের নেতৃত্ব দলের প্রয়োজন। তাঁকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। এটাই তাঁদের দাবি। পুলিশ তাঁদের আটক করে কিছুক্ষণ বাদে ছেড়ে দেয়।
লোকসভা ভোটে দলের বেনজির ভরাডুবির জন্য সভাপতি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনড় থেকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, সাক্ষাত্ থেকেও নিজেকে দূরে রেখেছেন রাহুল। ফলে কংগ্রেসের নেতৃত্বের প্রশ্নে অনিশ্চয়তা বহাল রয়েছে। মঙ্গলবার রাহুল শুধু মা তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী, বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতা কে সি বেনুগোপাল ও কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার সঙ্গে দেখা করেন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট তুঘলক লেনের বাসভবনে রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও শুধু প্রিয়ঙ্কার সঙ্গেই দেখা হয়। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতারা চাইছেন, রাহুল ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সর্বস্তরে দলকে চাঙ্গা করুন।
এই প্রেক্ষাপটে আজ দিল্লির তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিত জানিয়েছেন, তিনি রাহুলকে বোঝাতে কংগ্রেস নেতাদের প্রতিনিধিদল নিয়ে তাঁর বাসভবনে যাবেন। গতকাল নিজে রাহুলের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আমরা রাহুল গাঁধীর বাসভবনের কাছে গিয়ে আমাদের এই মনোভাব জানাতে চাই যে, তাঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত নয়। এতে দলের বিরাট ক্ষতি হবে যা আমরা চাই না। আমরা ওখানে যাব তাঁকে এটাই বলতে যে, তিনি যেন এমন না করেন।
গত শনিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল জানান, তিনি সভাপতি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৭-য় মা তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর হাত থেকে সভাপতির পদের ভার নেন রাহুল। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। মাত্র ৫২টি আসন পেয়েছে লোকসভা ভোটে। পাশাপাশি বিপর্যয়ের রেশ হিসাবে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার আর কতদিন, সেই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে।
গতকালই শীলা বিবৃতি দিয়ে বলেন, অতীতেও নানা সময়ে বিপর্যয়ে পড়েছে দল, কিন্তু পাল্টা ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পথে ফিরেছে। ইন্দিরা গাঁধীর গতিশীল নেতৃত্বে কংগ্রেস ১৯৭৭এর লোকসভা ভোটে বিপর্যয় পিছনে ফেলে আড়াই বছর বাদে ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিল, তারপর বেশ কয়েকটা বছর ক্ষমতায় বহাল ছিল। তাই লোকসভা ভোটে ব্যর্থতার জন্য কংগ্রেস সভাপতি, দলীয় কর্মীদের হতাশ হওয়ার দরকার নেই।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -