সন্দীপ সরকার এবং অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: পুরনো আয়কর কাঠামো (Old Tax Regime) অপরিবর্তিত থাকলেও, নতুন আয়কর কাঠামোয় (New Tax Regime) ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়েছে মোদি (Modi) সরকার। এখন নতুন না পুরনো, কোন আয়কর (Income Tax) কাঠামোয় লাভ বেশি, তা নিয়ে নানা মত উঠে এসেছে করদাতাদের।



পাঁচ-পাঁচটা বছর অপেক্ষার পর অবশেষে মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফুটিয়ে নতুন আয়কর কাঠামোয় ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়েছে মোদি সরকার। পুরনো আয়কর কাঠামো অপরিবর্তিত থাকলেও নতুন কর কাঠামোয় বার্ষিক ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করশূন্য করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। 


আর এতেই খুশির হাওয়া দেশের একটা বড় অংশের বেতনভোগী ও মধ্যবিত্ত মহলে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বাসিন্দা রাই বসু একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন।তাঁর বার্ষিক আয় ১০ লক্ষ টাকার কম। নির্দিষ্ট বেতনের মধ্যে থেকেই মেটাতে হয় হোম লোনের মোটা টাকা! এছাড়াও রয়েছে সন্তানের পড়াশোনা, গাড়ির তেলের খরচ-সহ আরও কত কী।


তবে এদিন বাজেটের পর তাঁর মতো মধ্যবিত্তের সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন রাই। নতুন না পুরনো, কোন আয়কর কাঠামোয় লাভ বেশি, তা নিয়ে নানা করদাতার নানা মত। রাজপুর সোনারপুরের বাসিন্দা সূপর্ণা পাল, বেসরকারি সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার। বার্ষিক বেতন ১০ লক্ষ টাকার ওপরে। কিন্তু হোম লোন, কার লোনের ইএমআই এবং সন্তানের পড়শানোর খরচের হিসেব করে তাঁর দাবি, নতুনের থেকে পুরনো কর কাঠামোতই লাভ মিলবে বেশি। 


সোনারপুর রাজপুরের বাসিন্দা সুপর্ণা পাল বলেন, "নতুন কাঠামোয় তো কোনও লাভ নেই। কারণ এখানে ৭ লক্ষ পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হবে না ঠিক, কিন্তু যেটা দিতে হবে, সেটা লাভজনক হবে না। এর থেকে পুরনোটা ঠিক আছে। ৮০-সি তে ছাড়, হোম লোনে ছাড় পাচ্ছি। হোম লোনের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পেলে সাহায্য হত। কিছু পেলাম না। 


আরও পড়ুন, প্যান হবে মূল পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য সুবিধা হবে, মন্তব্য চন্দ্রশেখর ঘোষের


বেসরকারি হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার ইশিতা মজুমদার। আবার নতুন কর- পরিকাঠামোয় খুশি। পুরনো আয়কর কাঠামোয় বাড়ির ঋণ-সহ বিভিন্ন বিনিয়োগে ছাড় মেলে। কিন্তু নতুন আয়কর কাঠামোয় বিনিয়োগের জন্য আলাদা ছাড় মেলে না। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার বাজেটের পর নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে, নতুন করকাঠামো, না পুরনো? কোনটায় লাভ বেশি?


একটি কর-কাঠামোয় ঢুকে গেলে পরবর্তীকালে কি তা বদল করা যাবে? কর বিশেষজ্ঞ বিবেক আগরওয়াল বলেন, "যারা দশের নীচে তাদের নিউ রেজিমে করা উচিত। তাদের খব বেশি বিনিয়োগ থাকে না। ১০-এর ওপরো যারা রয়েছে, ওলেড রেজিমে করা উচিত। কারণ সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যায়। স্যালারাইডদের রেজিম চেঞ্জ করার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই।" 


বাজেটের পর সকলেই জটিল অঙ্ক কষতে ব্যস্ত। কারণ, আগামী এক বছর এই অঙ্কের ওপরই নির্ভর করছে সংসারের বাজেট।