সৌভিক মজুমদার, আশাবুল হোসেন ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) এজলাসে বিক্ষোভ, বাড়ির সামনে পোস্টার মামলায় সিপি-র রিপোর্টে নাম থাকা ৬ ব্যক্তিকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ। সিসি ফুটেজ দেখে এজলাসের বাইরে বিক্ষোভে যুক্ত থাকা আইনজীবীদের শনাক্ত করতে পারবে বার অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের নাম মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ। তীব্র ভর্ৎসনা করা হল পুলিশকে (Calcutta High Court)।


পুলিশকে ভর্ৎসনা করলেন বৃহত্তর বেঞ্চের বিচারপতি টি এস শিবাগননম


বুধবার শুনানি চলাকালীন এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত বলে, "তদন্তের নামে আদালতের সঙ্গে লুকোচুরি খেলবেন না। তদন্ত শামুকের গতিতে হচ্ছে না ঘোড়ার গতিতে, সেটা আমরা দেখব। পুলিশকে সঠিক নাম দিন। একজনের পরিবর্তে আর একজনের নাম দেওয়া ঠিক হবে না।" এ দিন পুলিশকে ভর্ৎসনা করলেন বৃহত্তর বেঞ্চের বিচারপতি টি এস শিবাগননম। শুধু তাই নয়, পুলিশ কমিশনারের তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্টও খুলে দেখলেন না বিচারপতি।


গত ৮ জানুয়ারি রাতে, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে তাঁর যোধপুর পার্কের বাড়ির আশেপাশে এবং হাইকোর্ট চত্বরে একাধিক পোস্টার পড়ে।পর দিন, ৯ জানুয়ারি, হাইকোর্টের যে ১৩ নম্বর ঘরে বিচারপতি মান্থার এজলাস বসে। তার বাইরে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ। পর পর এই দু'টি ঘটনার জেরে তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি।


আরও পড়ুন: Kolkata News: মাটির নিচে চাপা পড়ছিল ইতিহাস, শহরে উদ্ধার সিরাজের জোড়া কামান


এই বিতর্কের আঁচ পৌঁছয় দিল্লি পর্যন্ত। এর পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি, হাইকোর্টের ৩ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে জমা পড়ে পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট। যদিও তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিচারপতিরা। এদিন বিচারপতি টি এস শিবাগননম নির্দেশ দেন, বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার লাগানোর অভিযোগে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে যে ৬ ব্যক্তির নাম আছে, তাঁদের আদালতে হাজির করতে হবে।


এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "পুলিশ তো এখানে তৃণমূল নেতৃত্বের কাজ করে। পুলিশ এখানে তোলাবাজি, গরুপাচার করতেই ব্যস্ত। বিচারপতির বাড়িতে কী পোস্টার পড়ল, তা নিয়ে ভাবিত নয় পুলিশ।"

এ দিন বিচারপতি আরও নির্দেশ দেন, ৯ জানুয়ারি বিচারপতি মান্থার এজলাসের বাইরে বিক্ষোভে যুক্ত থাকা আইনজীবীদের, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করতে হবে। মুখবন্ধ খামে সেই সব আইনজীবীদের নাম আদালতে জমা দেবে বার অ্যাসোসিয়েশন। সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে সতর্কতার সুরে বিচারপতি শিবাগননম বলেন, একজন দোষ করেছেন। কিন্তু আর এক জনের নাম দেওয়া ঠিক হবে না।


 পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে যে ৬ ব্যক্তির নাম আছে, তাঁদের আদালতে হাজির করতে হবে

২৭ মার্চ, বিচারপতি টি এস শিবাগননম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের বৃহত্তর বেঞ্চে হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।