সমীরণ পাল, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, জয়ন্ত পাল, কলকাতা: দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে দলের একাধিক নেতার। দলের অন্দর থেকে রোজই কোন্দলের খবর সামনে আসছে। সেই আবহে এ বার জল্পনা উস্কে দিলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakoli Ghosh Dastidar)। তাঁর দাবি, ছ'মাসের মধ্যে 'দুষ্টু লোকেদের' দল থেকে তাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। 


বিজয়া সম্মিলনী থেকে সতর্কবার্তা কাকলি-সৌগতর


দেগঙ্গা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বারাসাতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিতার। ওই মঞ্চেই উপস্থিত ছিলেন দলের আর এক সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)। সেখানে দু'জনের গলাতেই শোনা গেল আত্মসমালোচনার সুর। কাকলি বলেন, "দেবী দুর্গা দেবতাদের বাঁচানোর জন্য দুষ্টু শক্তি অসুরকে নিধন করেছিলেন। ঠিক অনুরূপভাবে আমরা আমাদের দলে কোন দুষ্টু শক্তির স্থান দেব না।"


কাকলি আরও বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে দল থেকে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক স্তর ও বুথে বুথে যত দুষ্টু লোক রয়েছে তাদেরকে তাড়াব।" ওই মঞ্চেই দাঁড়িয়ে সৌগত বলেন, "আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যারা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হচ্ছেন আদালতে নিজেদের পক্ষে বলার দায়িত্ব তাদের নিতে হবে, দল এর দায়িত্ব নেবে না।"


আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023: মার্চ-এপ্রিলে হতে পারে পঞ্চায়েত নির্বাচন, ইঙ্গিত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার, কয়লা পাচার মামলা জেলবন্দি তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা। এই প্রেক্ষাপটে  দুর্নীতি ইস্যুতে ফের সরব হলেন সৌগত। তাঁর বক্তব্য, "পুজোর আগে কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দলের কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ হয়েছে। অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু আমি দেখলাম আমাদের কর্মী সংখ্যা কোথাও কমেনি।"


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সতর্কবার্তা তৃণমূল নেতাদের


একই ভাবে ২০১৯-এর লোকসভা  নির্বাচন এবং ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূলের খারাপ ফলের জন্য, দলেরই একাংশকে দায়ী করেছেন সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। তাঁর কথায়, "২০১৯-এ আমরা কামব্যাক করে, সিতাই আমরা পুনরুদ্ধার করলেও জেলার বেশিরভাগ অংশ তাঁরা বিজেপি-র কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। এর একটা কারণ, আমাদের জেলার কিছু নেতা, কিছু কর্মী, যাঁরা নিজেদের বড় ভাবেন, যাঁরা দলের চেয়ে নিজেদের বেশি বড় ভাবে। তৃণমূল দলটাকে শুকিয়ে বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে।" কিন্তু তৃণমূল সাংসদ, বিধায়কদের কড়াবার্তা কি কাজে আসবে? দলের ভাবমূর্তির কি উন্নতি হবে? সামনের বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তা বোঝা যাবে বলে মত বিরোধীদের।