কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: এত দিন মুখে মুখে ফিরত বিজেপি (BJP) নেতাদের। এ বার আমদানি হল তৃণমূলে। আর তাতেই রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi) থেকে রাতারাতি 'পাপ্পু' নাম (Pappu Remarks) সেঁটে গেল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) গায়ে। সৌজন্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শুক্রবার শাহকে 'পাপ্পু' বলে কটাক্ষ করেন শাহ। তার পর থেকই সোশ্যাল মিডিয়ায় অমিত শাহকে 'পাপ্পু' বলে উল্লেখ করে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। শুধু লেখালেখি নয়, শাহের ছবি বসিয়ে তার পাশে 'দেশের সবচেয়ে বড় পাপ্পু' লিখে বিলি করা হচ্ছে। তা গায়ে চাপিয়ে ফেসবুকে ছবিও তুলছেন সকলে। 


অমিত শাহকে 'পাপ্পু'  বলে কটাক্ষ করেন অমিত শাহ


কয়লাপাচার  মামলায় শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষেককে। সেখান থেকে বেরিয়ে সরাসরি শাহকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, "দিল্লির জল্লাদদের কাছে মাথানত করব না। দেশের সবচেয়ে বড় পাপ্পু অমিত শাহ। বিরোধী শূন্য করে জিততে চান। অন্য মানুষকে এই নামে ডাকার বদলে নিজের রেকর্ডের দিকে নজর রাখা দরকার।" জাতীয় রাজনীতিতে রাহুলকে অযোগ্য প্রতিপন্ন করতেই এতদিন বিজেপি নেতারা 'পাপ্পু' শব্দটি ব্যবহার করতেন। শাহের উদ্দেশে সেই শব্দবাণই ছুড়ে দেন অভিষেক। 


তার পর শুক্রবার রাত থেকেই শাহকে 'পাপ্পু'  বলে উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। অভিষেকের শব্দবন্ধ ব্য়বহার করে ইতিমধ্যে টি-শার্টও ছাপিয়ে ফেলা হয়েছে। তা গায়ে চাপিয়ে ছবি তুলে দেদার পোস্ট করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে শুধু তৃণমূল এবং যুব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরাই নন, অভিষেকের পরিবারের লোকজনও তাতে যোগ দিয়েছেন। অভিষেকের তুতো ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অদিতি গায়েনও ওই টিশার্ট পরে ছবি দেন। সটান নিজাম প্যালসের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন অদিতি। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী দিনে দলের প্রচারে কর্মী-সমর্থকরা ওই টি-শার্ট পরেই যোগ দেবেন।


আরও পড়ুন: Khayrasole News: ‘প্রয়োজনে সাহায্য পেয়েছেন, দুঃসময়ে অনুব্রতর পাশে থাকা নৈতিক কর্তব্য’, খয়রাশোলে বললেন শতাব্দী


এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "এই পাপ্পুর ভয়েই তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া তৃণমূলের। দেখতেই তো পাচ্ছেন, এক একজন নেতা ভিতরে ঢুকছেন আর কী অবস্থা হচ্ছে তাঁদের। এমন পাপ্পু ভারতের রাজনীতিতে থাকা ভাল। যার ফলে এই চোর নেতাদের খোঁজ পাচ্ছি আমরা, কার বাড়িতে ৫০ কোটি, কারও বাড়িতে ৬০ লক্ষ, ফ্ল্যাটের কাগজ। অমিত শাহ এভাবেই খেলে যান। ছয়ের পর ছয় মেরে যান।"


সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর প্রচার তৃণমূলের


সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি আবার বলেন, "কে যে কখন কার পাপ্পু, এটা বলা মুশকিল। কখনও দেখি দোস্তি, কখনও আবার লোক দেখানো কুস্তি। দুই দিন হয়ত কুস্তি হবে, তার বার কবে দোস্তি হবে ঠিক আছে। বোঝাপড়া না থাকলে তৃণমূলের গোটা মন্ত্রিসভার জেলে চলে যাওয়ার কথা। সারদ , নারদ, কয়লা, বালি—কোনও সুরাহা হয়েছে! দুই দলই দুর্নীতিবাজ। দুই দলের সব পাপ্পুকেই হটাতে হবে।" তবে এখসময় রাহুলকে 'পাপ্পু' বলে যে ভাবে কটাক্ষ করতেন বিজেপি নেতৃত্ব, তাতে তাদের এখন নিজের অস্ত্রে নিজেদেরই ঘায়েল হতে হচ্ছে বলেও মনে করছেন অনেকে।