ওন্দা: বিস্ফোরণ ঘটতে চলেছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ঠিক তার পরই সোমবার চাকরি যায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। এবার আরও ৫৯ হাজারের চাকরি যেতে চলেছে বলে ঘোষণা করলেন বাঁকুড়ার ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। ৩০ তারিখ আরও ৫৯ হাজার চাকরি বাতিল হবে বলে  হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। শুভেন্দুর বিস্ফোরণ-হুঁশিয়ারির পরে অমরনাথের এই দাবিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। (Recruitment Case)


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছে। আদালতের সেই রায়ের নেপথ্যে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ। কারণ শনিবার প্রকাশ্য সভায় 'বিরাট বিস্ফোরণ ঘটতে চলেছে, তৃণমূল বেসামাল হয়ে যাবে' বলে মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু। আর তার পরই ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত। বিজেপি-র লিখে দেওয়া রায়ই আদালত শুনিয়েছে বলে সেই  নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন মমতা। 


সেই আবহেই এবার অমরনাথ আরও চাকরি বাতিলের হুঁশিয়ারি দিলেন। প্রকাশ্য সমাবেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "২৫ হাজার পরিবারকে এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ভুয়ো চাকরি দিয়ে বরবাদ করে দিয়েছে। ৩০ তারিখ আসছে। আরও ৫৯ হাজার লোকের চাকরি যাবে। এই চোর তৃণমূলকে ভোট দেবেন, নাকি বিজেপি-কে, চিন্তা-ভাবনা করুন।"


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'আমরা চাকরি দিচ্ছি, আর ওরা চাকরি খাচ্ছে' ফের আক্রমণে মুখ্যমন্ত্রী


কোন ৩০ তারিখ, তা যদিও খোলসা করেননি অমরনাথ। তবে তাঁর মন্তব্য সামনে আসার পরই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "চাকরি যাওয়ার একটা পৈশাচিক উল্লাস... বিজেপি-র নেতারা পৈশাচিক আনন্দ করছেন। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন সিপিএম-কংগ্রেসের নেতারা। কত যোগ্য প্রার্থী পড়াচ্ছেন, কত যোগ্য প্রার্থী ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন, তাঁদের কর্মচ্যুত করা... যেখানে SSC নির্দিষ্ট করে জানিয়েছে, বিতর্কিত বা প্রশ্নচিহ্ন বা তদন্তসাপেক্ষ আছে এমন চাকরি কাদের, তার মানে বাকিদের নিয়ে বিতর্ক নেই। তাহলে যাঁদের নিয়ে বিতর্ক নেই, তাঁদের চাকরি খাচ্ছে কোর্ট। এটা কোন ধরনের বিচার? এটা অবিচার। কোথাও এটা একসূত্রে বাঁধা, বিজেপি বলে দিচ্ছে, তার পর রায় দিচ্ছে কোর্ট। বিজেপি আগাম বলছে বিস্ফোরণ, তার পর চাকরি যাচ্ছে কোর্টে। বিজেপি বিধায়ক বলছেন আরও কিছু সোকের চাকরি যাবে, আবার একটা কোর্টের অর্ডার আসছে। তাহলে বিজেপি-র পার্টি অফিস থেকে টাইপ করে অর্ডার থাকছে, না কোর্ট অর্ডার লেখার সময় বিজেপি-র লোকজন থাকছে, প্রশ্ন উঠতেই পারে।"


এ নিয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, "এ মাসের ৩০ তারিখ প্রাথমিক OMR শিট নিয়ে শুনানি রয়েছে। কে কী বলেছেন, কোন মাসের ৩০ তারিখ বুঝিয়েছেন, তা তিনিই বলতে পারবেন। আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে আমরা।" প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, "নেই কাজ তো খই ভাজ। এসব বলে এঁরা মানুষের কাছে কী প্রমাণ করতে চাইছেন জানি না।কিন্তু চাল আর কাঁকর মিশে গিয়েছে। এটা সত্যিই যে যোগ্যদের চাকরি থাকা উচিত। আদালতের রায় নিয়ে বিশ্লেষণ হতে পারে, উচ্চ আদালতে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা দুর্ভাগ্যজনক। এই চাকরি চুরির মধ্যে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ট ভাঙানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।"