অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: অবশেষে জয়গাঁর তোর্সা নদীতে ভেসে যাওয়া দুজন শিশুকন্যার মৃতদেহ উদ্ধার হল।
সোমবার থেকে ভুটান পাহাড় ও দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকায় অতিবৃষ্টির জেরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, কালজানি নদী। প্রতিটি নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল। এমন সময়ে বুধবার জয়ঁগা ছোট মেচিয়াবস্তি এলাকার বাসিন্দা সফিকুল আনসারির দুই শিশুকন্যা তোর্সা নদীতে ভেসে যায়।
শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল দশটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল দুই বোন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আচমকাই পাড় ভেঙে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে ভেসে যায় ৮ বছরের মণীষা খাতুন ও ১০ বছরের রূপসা খাতুন।
আরও পড়ুন: ফুঁসছে তোর্সা, খরস্রোতা নদীর পাড় ভেঙ্গে তলিয়ে গেল ২ বোন
ভুটান সীমান্তবর্তী জয়গাঁর ছোট মেচিয়াবস্তির দুই বোনের খোঁজে নামানো হয় স্পিডবোট। প্রবল খরস্রোতা তোর্সায় তল্লাশিতে নামেন ডুবুরিরা। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা জয়ঁগা তোর্সা নদীতে স্পিড বোট নামিয়ে তল্লাশি চালায়। কিন্ত রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও তাদের সন্ধান মিলেনি।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তোর্সা নদীতে তল্লাশি চালাতে শুরু করে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ও কালচিনি ব্লক প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে জয়ঁগাও থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরত্বে বিবাড়ি এলাকায় তোর্সা নদী থেকে ছোট শিশুকন্যার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
অপরজনের মৃতদেহ প্রায় ১২ কিমি দূরে হাসিমারা এলাকায় তোর্সা নদীর রেলব্রিজের কাছাকাছি থেকে উদ্ধার হয়। জয়ঁগা থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: জলের তোড়ে তলিয়ে গেল বাড়ি, ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু শিশুর
তোর্সার মতো তিস্তাও, ভয় ধরিয়েছে জলপাইগুড়িবাসীকে। জলের চাপ এতটাই যে, গাজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজের ১০টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তার জেরে প্রায় ১০ ফুট স্লুইস গেট ছাপিয়ে বইছে জল। জলপাইগুড়ির দোমহনী থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। কার্যত বাঁধ ছুঁইছুঁই জল।
এদিকে, প্রবল বর্ষণে দার্জিলিঙের মাটিগাড়ায় সেতুর পিলার বসে গিয়ে বিপত্তি। একত্রিশ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর থাকা বালাসন সেতুতে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল।
আরও পড়ুন: বেড়াতে গিয়ে পা ফস্কে বেলপাহাড়ির ঘাগড়া জলপ্রপাতে তলিয়ে মৃত্যু ৮ বছরের শিশুর