আলিপুরদুয়ার: বনদফতরের ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হল বাইসন (Bisoon)। মূলত, রাজ্যে হাতির হানায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর (Madhyamik Examinee) মৃত্যুর পর আর কোনওভাবেই ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য সরকার (WB Govt)। আর এবার ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বাইসনকে বাগে আনল বন দফতর (Forest Department)।
সকাল থেকে আলিপুরদুয়ার-১ নং ব্লকের পররপার গ্রাম পঞ্চায়েতের মনিয়ারপুর পাকড়িতলা, তপসিখাতা বসটারী এলাকায় একটি বাইসন আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। চিলাপাতার জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে আসা বাইসনটিকে নিয়ে সকাল থেকেই দুই বনদপ্তর, বক্সা এবং জলদাপারা বনকর্মীদের তৎপরতা ছিল। বাঁশ ঝাড়ের জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা বাইসনকে খুজতে ড্রোন ক্যামেরারও সাহা্য্য নেওয়া হয়। কিন্তু কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছিলনা বাইসনটিকে। কিন্তু বিকাল সাড়ে ৪-টা নাগাদ ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু করতে সক্ষম হয় বন দফতর। এরপর পুরুষ বাইসনটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিলাপাতার জঙ্গলে। চিলাপাতা জঙ্গলের রেঞ্জার সুদিপ্ত ঘোষ বলেন, 'বাইসনটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হবে জঙ্গলে।'
প্রসঙ্গত, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসাই হয়নি জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে, হাতির হানায় মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। রাজগঞ্জের পাঁচিরাম নাহাটা। স্কুলের ছাত্র অর্জুন দাসের সিট পড়েছিল বেলাকোবা কেবলপাড়া হাইস্কুলে। সময় বাঁচাতে ফরেস্ট রোড ধরে মোটরবাইকে যাচ্ছিল বাবা ও ছেলে। কুয়াশার কারণে হাতির সামনে পড়ে যায় তারা। বাবা প্রাণে বাঁচলেও ছেলেকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারে দাঁতাল। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় রেঞ্জারদের সতর্ক থাকতে বলার পাশাপাশি, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও গৌতম দেবকে মৃত পরীক্ষার্থীর বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই হাতির হানা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয় রাজ্য জুড়ে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎপরতা বৃদ্ধি পায় বনদফতরেরও। স্বাভাবিকভাবেই এরপরে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি বন দফতর।
আরও পড়ুন, 'কমেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, বেড়েছে ভোটার', দাবি শুভেন্দুর
হাতি উপদ্রবের জেরে বাঁকুড়ার জঙ্গল লাগোয়া তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে বিপজ্জনক হিসাবে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে বন দফতর। এই তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্র হল বড়জোড়া হাইস্কুল, বেলিয়াতোড় হাইস্কুল ও গদারডিহি হাইস্কুল। সূত্রের খবর, যথেষ্ট সংখ্যক হুলা পার্টি মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রথম জঙ্গল লাগোয়া ২০টি গ্রাম থেকে শতাধিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। এরজন্য মোট ১৪টি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারে তার জন্য ইলেকট্রিক ফেন্সিং রয়েছে এমন রুটকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র সেই রুট ধরেই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে গাড়িগুলির যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।