সন্দীপ সরকার, কলকাতা: স্থায়ী স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে চরমে চাপানউতোর। মঙ্গলবারই এই পদে নিয়োগের জন্য় ইন্টারভিউ দেন ৬টি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। সূত্রের দাবি, এর মধ্য়ে তিনজনে নাম সুপারিশ করে নবান্নে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন (Swastha Bhawan)। তার মধ্য়ে দু'জনের নাম করে আবার স্বাস্থ্য় ভবনের বাইরে দেওয়ালে সাঁটা হয় পোস্টার। যেখানে তোলা হয় স্বজনপোষণ, দুর্নীতির মতো অভিযোগও।
নিয়োগ নিয়ে তরজা: রাজ্য়ের স্থায়ী স্বাস্থ্য় শিক্ষা অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে টানাপোড়েন তুঙ্গে। মঙ্গলবার এই পদের জন্য় ইন্টারভিউ নিয়েছে স্বাস্থ্য় দফতর। আর সেই রাতেই এই নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে, স্বাস্থ্য় ভবনের বাইরের দেওয়ালে সাঁটা হয়েছে পোস্টার। বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা পদে স্থায়ীভাবে কেউ নেই। কার্যনির্বাহী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত এক শীর্ষকর্তা দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
কয়েক মাস আগে এই পদে নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ হলেও, চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়নি। সূত্রের দাবি, স্বাস্থ্য় ক্ষেত্রে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ‘উত্তরবঙ্গ গোষ্ঠী’র ঘনিষ্ঠ এক অধ্যক্ষকে পদে বসানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন সরকারি চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। তারপর ওই ইন্টারভিউ বাতিল করে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা পদে নিয়োগের নতুন নিয়ম জারি হয়। মঙ্গলবার ৬টি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ইন্টারভিউ দেন। এই তালিকায় রয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা, কামারহাটি সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস,মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ অমিতকুমার দাঁ, ঝাড়গ্রাম মেডিক্য়াল কলেজের অধ্য়ক্ষ সুস্মিতা ভট্টাচার্য,বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্য়ক্ষ কৌস্তভ নায়েক এবং রাজ্য় স্বাস্থ্য় বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুহৃতা পাল।
সূত্রের দাবি, কৌস্তভ, সুহৃতা ও ইন্দ্রনীলের নাম সুপারিশ করে নবান্নে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। এদিকে, স্বাস্থ্য় ভবনের বাইরের দেওয়ালে যে পোস্টার সাঁটা হয়েছে, তার একটিতে ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, পার্থপ্রতি প্রধান, ইন্দ্রজিৎ সাহা ও অমিতকুমার দাঁর কাজের অভিজ্ঞতার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। তারপর নীচে কৌস্তভ নায়েকের ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, এই সমস্ত যোগ্য় প্রার্থীকে পিছনে ফেলে মাত্র এক বছর কয়েক মাসের প্রিন্সিপাল হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে আগামী DME হতে চলেছেন ডক্টর কৌস্তভ নায়েক। তাঁকে আগাম শুভেচ্ছা। আর একটি পোস্টারে সুহৃতা পাল ও কৌস্তভ নায়েকের ছবি দিয়ে, তাঁদের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, দুর্নীতির মতো অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, উত্তরবঙ্গ লবি-র আশীর্বাদে তাঁদের যে কোনও একজন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা হচ্ছেন।
এপ্রসঙ্গে বর্ধমান মেডিক্য়াল কলেজের অধ্য়ক্ষ কৌস্তভ নায়েক জানিয়েছেন, “আমি ইন্টারভিউ দিয়েছি। সরকার কাকে সুযোগ দেবে, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আর সুহৃতা পালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।’’ স্বাস্থ্যভবনে ঢোকার মুখে এমন পোস্টার সাঁটা দেখে, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। স্বাস্থ্যসচিব দফতরে ঢোকার পর, কর্মীরা এসে ওই পোস্টার ছিঁড়ে দেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Sheikh Shahjahan: অবশেষে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান, ৫৫ দিন পর পুলিশের জালে 'সন্দেশখালির ত্রাস'