উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : লম্বা সময় ধরে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে শেষমেশ পড়ুয়াদের মহামিছিল ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ (Police)। কলেজ স্ট্রিটের মুখে পড়ুয়াদের (Students Rally) আটকে দিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের সাফ বার্তা দেওয়া হয়, তাঁদের মিছিল আর এগোতে দেওয়া হবে না। পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলার মাঝেই হঠাৎ করে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। কার্যত চ্যাংদোলা করে একাধিক পড়ুয়াদের তোলা হল প্রিজন ভ্যানে (Prison Van)। একাধিক পড়ুয়াকে আটক করে পুলিশ। যার জেরে কার্যত ৩ ঘণ্টা ধরে কলকাতার (Kolkata) রাজপথে বিক্ষোভ-অবরোধে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিও আপাতত নিয়ন্ত্রণে।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Aliah University) থেকে পড়ুয়াদের মহামিছিল রওনা হওয়ার পর থেকেই গোটা রাস্তা জুড়ে ঠান্ডা মাথায় পড়ুয়াদের বারবার বোঝানোর চেষ্টা চলেছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু কার্যত পুলিশের কথা এড়িয়ে তাদের অনুরোধ-প্রতিরোধ ঠেলে মিছিল এগোতে থাকে। নির্দিষ্ট মিছিলের পথ ভেঙে মল্লিকবাজার, শিয়ালদা ক্রমশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশ মাঝে গোটা সময়টায় অনুরোধের পথে এগোলেও পড়ুয়াদের কলেজ স্ট্রিটের দিকে এগোতে দিয়ে পথ রুখে দাঁড়ায়। পাঁচজন আইপিএস পদমর্যাদার পুলিশ বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর্ব শুরু করেন। কলেজ স্ট্রিটেও অবশ্য পড়ুয়াদের মেজাজ ছিল রণংদেহী। ঠান্ডা মাথায় অনেকক্ষণ এগোনোর পর যখন পুলিশের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া দু'জন প্রতিনিধিকে মহাকরণে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে। কিন্তু সেই আলোচনা চলার মাঝেই ফের ধস্তাধস্তি-ঠেলাঠেলি পরিস্থিতি তৈরি হয়, আর যার পরেই আক্রমণাত্মক মেজাজে মিছিল ছত্রভঙ্গ করার পথ নেয় পুলিশ।
ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর (Anish Khan Death) ন্যায়বিচারের দাবিতে ও দ্রুত দোষীদের শাস্তির দাবিতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েছিল পড়ুয়াদের মিছিল। স্লোগানে, গানে, বিক্ষোভে প্রতিবাদের পথে যাবতীয় পুলিশি প্রতিরোধ ভাঙতে ভাঙতে এগোতে থাকে তারা। প্রথমে ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে মহাকরণে মিছিলকে না যেতে দেওয়ার ব্যবস্থা হিসেবে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও ক্রমশ দিক বদলাতে থাকা মিছিলকে আটকানো হয় কলেজ স্ট্রিটে। নিরাপত্তা বেষ্ঠনী তৈরি করে জলকামান নিয়ে প্রস্তুত হতে শুরু করে পুলিশ। আনা হয় প্রিজন ভ্যানও। যারপরই আলাপ-আলোচনা পর্বের মাঝেই ফের ধস্তাধস্তি শুরু হতে রণংদেহী মেজাজে মিছিল ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ।