আসানসোল: দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকেই তাঁকে লক্ষ্য করে স্লোগান উঠছিল জায়গায় জায়গায়। এমনকি স্লোগানের বাণ থেকে রক্ষা পাননি মেয়েও। শনিবারও ফের একদফা স্লোগান আক্রমণের মুখে পড়তে হল বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal Arrested)। গাড়ি থেকে নামামাত্র তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে ‘গরু চোর’ কটাক্ষ। আবার একই সময় ‘কেষ্ট মণ্ডল জিন্দাবাদ’ রবও ওঠে। অনুব্রতর হেফাজত বাড়ানোর আর্জি জানাচ্ছে সিবিআই।


অনুব্রতকে নিয়ে আসানসোল সিবিআই আদালতে গোয়েন্দারা


শনিবার সকালে নিজাম প্যালেস থেকে অনুব্রতকে বার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। প্রায় ৫০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের নিরাপত্তা সম্পন্ন কনভয়ে বসিয়ে এগোয় গাড়ি। প্রথমে কমান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় তাঁর। তার পর সটান আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের উদ্দেশের রওনা দেয় কনভয়। পথে ইসিএল-এর গেস্ট হাউসে মধ্যাহ্ণভোজের জন্য গাড়ি থামানো হয়। তার পর ফের রওনা দেয় কনভয়।


এর পর দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ আসানসোল আদালত চত্বরে এসে পৌঁছয় সিবিআই কনভয়। সেখানে গাড়ি থেকে অনুব্রতকে নামাতেই উড়ে আসে একের পর এক কটাক্ষ। আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রতর সমর্থকরাও। তাঁরাও অনুব্রতর সমর্থনে রব তুলতে শুরু করেন। এক সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়।


এ দিন আদালত চত্বরে অনুব্রতকে দেখে মেজাজ হারান এক ব্যক্তি। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে তিনি বলেন, ‘‘গরুচোরের সেবা কেন? আমাদজের জীবন যে শেষ করে দিল, তার এত সেবা কেন?’’ এর পাল্টা অনুব্রত সমর্থকরা ‘কেষ্ট মণ্ডল জিন্দাবাদ’, ‘জয় বাংলা’ রব তোলেন। 


আরও পড়ুন: Sougata Roy: পার্থ-র বান্ধবীর ফ্ল্যাটে টাকা উদ্ধার হয়েছে, অনুব্রত-র থেকে সেরকম উদ্ধার হয়নি: সৌগত রায়


গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।  তার তদন্তে নেমে অনুব্রত-সহ ঘনিষ্ঠদের প্রায় ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit) বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা যায়। এ ছাড়াও নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, বিলাসবহুল গাড়ি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার হদিশ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে। অনুব্রতর চালকল থেকেই রেশনের চাল আসত বলে অভিযোগ।


কিন্তু এ দিন কার্যত সব অভিযোগ খারিজ করে দেন অনুব্রত। নিজাম প্যালেস থেকে বেরনোর সময় সিবিআই-এর অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন, ‘‘বলতে দিন।’’ বেনামি সম্পত্তির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘‘কোনও বেনামি সম্পত্তি নেই।’’  


অনুব্রতর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ সিবিআই-এর


গোড়া থেকেই অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্ত অসহযোগিতার অভিযোগ করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাহলে কি সত্যিই তদন্তে অসহযোগিতা করছেন তিনি, নাকি পূর্ণ সহযোগিতা করছেন, প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে অনুব্রত বলেন, ‘‘১০০ শতাংশ’’, অর্থাৎ তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তিনি।