এরশাদ আলম, কৌশিক গাঁতাইত, শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: গরু পাচার মামলায় গ্রেফতারির চার মাস ন'দিনের মাথায় নিজের জেলা বীরভূমে (Birbhum News) ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। তাও আবার সম্পূর্ণ অন্য একটি মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে। আপাতত অনুব্রতর ঠিকানা  দুবরাজপুর থানার লকআপ। দলের জেলা সভাপতির জন্য আদালত চত্বরে তৃণমূল (TMC) নেতা-কর্মীদের ভি়ড় ফের উস্কে দিয়েছে প্রভাবশালী তত্ত্ব (Cattle Smuggling Case)। 


চার মাস ন'দিনের মাথায় নিজের জেলা বীরভূমে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল


গরুপাচার মামলায় ১১ অগাস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে বীরভূম ছেড়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তার পর কলকাতায় সিবিআই-এর অফিস এবং আসানসোল জেলে চার মাস কাটিয়ে অবশেষে মঙ্গলবার ফের নিজের জেলায় ফিরলেন তিনি।

সোমবার ইডির হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাওয়া যখন প্রায় নিশ্চিত, তখনই সামনে আনা হয় এক বছরের পুরনো একটা অভিযোগ। একই দিনে দায়ের হয় মামলা। তার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার সকালে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে নিয়ে আসা হয় তাঁর নিজের জেলার আদালতে।

মামলা শুনে অনুব্রতকে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ফলে আপাতত তাঁর ঠিকানা বীরভূমের দুবরাজপুর থানার লকআপ।


আরও পড়ুন: Anubrata Mandal: সকালে উঠে নিয়ম করে জল ঢালতেন, অনুব্রতর দিল্লিযাত্রা আটকালেন শিবঠাকুরই!


চার মাস পর অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূম আসার খবর শুনে, মঙ্গলবার সকালেই আদালত চত্বরে পৌঁছে যান, তৃণমূল পরিচালিত দুবরাজপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে এবং তিন তৃণমূল কাউন্সিলর সওকত মোল্লা, নাজির হোসেন এবং সাগর কুণ্ডু। রঞ্জিতের কথায়, "আমাদের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল নির্দোষ। আমি অনুব্রতকে ভালবাসি।"

তৃণমূলকর্মীর আনা খুনের চেষ্টার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুব্রতকে যখন আদালতে তোলা হচ্ছে, সেই সময় তাঁকে কার্যত বীরের সম্মান দিতে আদালতের হাজির ছিলেন তৃণমূলেরই স্থানীয় নেতাকর্মীরা। 


গরু পাচার মামলায় বার বার আদালতে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রভাবশালী বলে দাবি করেছে সিবিআই

গরু পাচার মামলায় বার বার আদালতে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রভাবশালী বলে দাবি করেছে সিবিআই। সম্প্রতি অনুব্রত মণ্ডলকে প্রভাবশালী বলে মন্তব্য় করেন বিচারপতিও। এই প্রেক্ষাপটে বীরভূমে আদালতের বাইরে অনুব্রতর জন্য় অনুগামীদের ভিড় দেখে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এ সব আদতে প্রভাবশালী তত্ত্বকে জোরাল করবে না তো? এর মধ্য়ে আবার অনুব্রতকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। অন্যদিকে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।

এ দিন ফের অনুব্রতকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেন ফিরহাদ। বলেন, "গ্রেফতার করলে সুন্দরবনের একটি বাঘ যদি খাঁচায় যায়, তাবলে কি সে হরিণ হয়ে যায়? আইন সবার উপরে। বীরের সম্মান নিশ্চয়ই দেব। কিন্তু আইন আইনের কাজ করবে। আইন থাকা মানে বীরের সম্মান দেব না, তা তো নয়!"


ফিরহাদের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান রাজ্যে বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, " এ রাজ্যের পুলিশের ভূমিকা কী, তা আমরা সকলেই জানি। রদ্দি বাংলা সিনেমার স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। একটা মানুষ যাকে তৃণমূল জেল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরায়নি, তার সুবিধার্থে আয়োজন করা হচ্ছে।"

এই টানাপোড়েনের মধ্য়েই রাউস অ্য়াভিনিউ কোর্টের নির্দেশ অর্থাৎ তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্রকে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। বুধবার তার শুনানি।