প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (cattle smuggling) ১৪ দিনের জেল হেফাজত (judicial custody) বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (anubrata mondal)। একই মেয়াদের জেল হেফাজত সায়গল হোসেনেরও (saigal hossein)। আজ অনুব্রতর তরফে জামিনের আবেদনই করা হয়নি। গতকাল ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পর আজ জামিনের আর্জি করেননি কেষ্টর আইনজীবীরা, খবর এমনই। নতুন করে জেলে গিয়ে জেরার আবেদন করেছেন সিবিআই-এর আইনজীবীরা। জামিনের আবেদন খারিজের পরেই জেলে ফিরলেন কেষ্ট আদালত চত্বরে আজ ছিলেন না অনুব্রতর কোনও অনুগামী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কুলুপ কেষ্টর।
কী হল?
এই মামলার শুনানি যখন শেষের দিকে, তখন তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান তাঁরা নতুন করে জেলে গিয়ে অনুব্রতকে জেরা করতে চান। সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে বলে খবর। যে কোনও দিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৬টার মধ্যে গিয়ে তাঁকে জেরা করতে পারবেন সিবিআই অফিসাররা। এদিন ফের জেল হেফাজতের ঘোষণা হতেই দ্রুত কোর্ট থেকে বের করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য দিকে, সায়গল হোসেনকে তিহাড় জেল থেকে ভার্চুয়াল মোডে কোর্টে পেশ করা হয়। বিচারক সায়গলকে প্রশ্ন করেন, ঠিক আছেন কিনা। তবে তিনি জানান, ঠান্ডার জন্য তিনি কলকাতায় সশরীরে হাজিরা দিতে চান। এই মর্মে আবেদন জানানোর কথা বলেন বিচারক। এদিন তদন্তকারী অফিসারকে বিচারক তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি একটি কেস ডায়রি দেওয়া হল। মিনিট পাঁচেক সেই কেস ডায়রি খতিয়ে দেখে প্রশ্ন করেন বিচারক। তার পরই জেল হেফাজতের নির্দেশ।
হাইকোর্ট যা বলেছিল...
গত কালই অনুব্রত মণ্ডলকে বার বার হেফাজতে নেওয়ার কারণ হিসেবে তাঁর 'প্রভাবশালী' হওয়ার তত্ত্ব তুলে ধরেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। বীরভূমের তৃণমূল (সভাপতি যে 'প্রভাবশালী', তদন্তকারীদের সেই তত্ত্বে গত কাল আদালতেরও সিলমোহর পড়ে। গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরও এখনও বীরভূমে তৃণমূলের সভাপতি পদে রয়েছেন অনুব্রত, প্রশাসনেও তাঁর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করে আদালত। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রতর জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। সেখানে তৃণমূল কর্মী শিবঠাকুর মণ্ডলের দায়ের পুরনো অভিযোগকে খুঁচিয়ে তোলার বিষয়টি যেমন উঠে আসে, তেমনই অনুব্রতর 'প্রভাবশালী' হওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। অনুব্রত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, তসাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলে এ দিন মন্তব্য করে আদালত। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে অনুব্রতর জামিনের শুনানি চলছিল। সেখানে অনুব্রতর আর্জির খারিজ করে দিয়ে বলা হয়, "অনুব্রত মণ্ডল এখনও ক্ষমতাশালী। রাজনৈতিক পদে রয়েছেন। শুধু সমাজে নয়, প্রশাসনেও ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ওঁর।"
আরও পড়ুন:রাজ্যের মিড-ডে মিলে এবার মুরগির মাংসও, বরাদ্দ অতিরিক্ত