সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে করণীয় কী, তা জানতে এখন দিল্লির সদর দফতরের মতামতের অপেক্ষায় সিবিআই।  গতকালই সিবিআই দফতরে না গিয়ে এসএসকেএম-এ অসুস্থতার কারণে ভর্তি হন অনুব্রত। সিবিআই-কে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, তিনি অসুস্থ, তাই চার সপ্তাহ সময় চান।  বিকল্প হিসেবে অনুব্রতর প্রস্তাব, সিবিআই চাইলে চিকিত্‍সকদের অনুমতি নিয়ে হাসপাতালে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রত মণ্ডলের চিঠি দিল্লিতে সদর দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন সিবিআইয়ের কলকাতার আধিকারিকরা। গতকাল সারাদিন যা যা হয়েছে, তার সময় ধরে ধরে বিস্তারিত তথ্যও দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।  গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ল’ সেলের সঙ্গে বৈঠকও করেন সিবিআই আধিকারিকরা। 


প্রসঙ্গত, বুধবারও CBI দফতরে যাননি অনুব্রত মণ্ডল। নিজাম প্যালেসের বদলে ভর্তি হন SSKM হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে। গরু পাচার মামলায় এখনও পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে ৫ বার তলব করেছে CBI। ৫ বারই হাজির হলেন না তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি। গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে CBI তলবের পর, গ্রেফতারির আশঙ্কায়, রক্ষাকবচ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। ১১ মার্চ তাঁর রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।


আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই বলে জানান বিচারপতি। শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, এই মামলায় আবেদনকারীর আশঙ্কার কোনও কারণ আছে বলে আদালত দেখতে পাচ্ছে না। তাঁকে (অনুব্রত) সাক্ষী হিসেবে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সিবিআই-এর হাত আদালত কেন বেঁধে দেবে? প্রশ্ন করেন বিচারপতি মান্থা। তিনি বলেন, সিবিআই বলেই যে তারা ড্রাগন এবং গিলে খেয়ে নেবে এই ভাবনা স্বাস্থ্যকর নয়। 


আরও পড়ুন, এখনও বুক ধড়ফড়ানি কমছে না অনুব্রতের, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির জন্য বসল মেডিকেল বোর্ড 


বিচারপতি রাজশেখর মান্থা আরও বলেন, গৃহবন্দি থাকার মতো অবস্থা তাঁর (অনুব্রত) নয় বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছে আদালত। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূল নেতার আবেদন খারিজ করে, সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। 


কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ হওয়ার পর, গরুপাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে পঞ্চমবারের জন্য তলব করে CBI। বুধবার সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে, CBI’এর অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু, CBI-এর কাছে হাজিরা দিলেন না অনুব্রত মণ্ডল। ভর্তি হন SSKM হাসপাতালে। গরুপাচার মামলা ছাড়াও, ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় ২ বার অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল CBI। দু’বারই হাজিরা দেননি তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি। এই মামলায় তাঁকে রক্ষাকবচ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।