অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : প্রায় ২ বছর পর, বীরভূমে নিজের বাড়িতে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা। ঢাক বাজিয়ে, আবির খেলে, নকুলদানা বিলি করে স্বাগত জানানো হল তৃণমূল নেতাকে। গরুপাচার কাণ্ডে তিহাড়ে কাটিয়ে আসা মানুষটাকে বীরের সম্মান দিয়ে অনুব্রতকে ফের একবার 'বাঘ' সম্বোধন করলেন ফিরহাদ হাকিম। কেউ আনলেন ঢাক, কেউ আনলেন নকুল দানা, কেউ আনলেন শাঁখ। অনুব্রতর গুঢ়-বাতাসা, নকুল দানা, আর চড়াম চড়াম ঢাকের বাণী মুখে মুখ ফেরে। তিনি ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ফের ফিরল সেই সব বাণী নিয়ে চর্চা। অনুব্রতর ফিরে আসাকে সেলিব্রেট করতে এক রাশ নকুলদানা নিয়ে বীরভূমে নিচুপট্টিতে পৌঁছে গেলেন নাকতলার তৃণমূল সমর্থক। তাঁর সগর্ব ঘোষণা, তিনি এসেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়া থেকে। তাঁর নাকতলা উদয়ন ক্লাব থেকে। আবেগে বাধ মানছিল না তাঁর। বললেন,' নকুলদানা এনেছি। এরপরে হবে চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজবে। নকুলদানা বাতাসা খাওয়ানো হবে। '
অরুণ দত্ত, তৃণমূল কর্মী। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়ার লোক। বললেন, এসেছি নাকতলা উদয়ন থেকে। অনুব্রতর ফিরে আসায় যারপরনাই খুশি তিনি। বললেন, 'যারা আমাদের দাদাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিয়েছিল, আমরা আমাদের হিসাবটা বুঝে নেব এবার।' অরুণের দাবি, 'পার্থদার বাড়ির পাশ থেকে এসেছি। মেয়র বলেছিল বাঘ যখন জেলে থাকে, খ্য়াকশিয়ালরা চিৎকার করে। বাঘ এবার বাইরে চলে এসেছে। সব পালাবে এবার।'
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে । কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বীরভূমের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। গুসকরার পর থেকে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন তৃণমূলকর্মীরা। এদিন বোলপুরে নিচুপট্টিতে অনুব্রতর বাড়ি কার্যত নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়।
প্রায় দু'বছর বন্দি থাকলেও, তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি অনুব্রত মণ্ডলকে। তিনি যে এখন বীরভূমের বহু মানুষের মনেও একই জায়গায়, বুঝিয়ে দিল এই উষ্ণ অভ্যর্থনা। এদিন অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি ফেরার পর দেখা করতে এসেছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী । কিন্তু দরজা থেকে ফিরতে হয় তাঁদের। বিকেলে বাড়িতে এসেও অনুব্রতর দেখা পাননি সাংসদ অসিত মাল, আরও ২ তৃণমূল বিধায়ক। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলে থাকাকালীন, যাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন, তাঁদেরই প্রাধান্য় দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।
আরও পড়ুন