পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: লালমাটির জেলা বাঁকুড়ার (Bankura) অন্যতম প্রাচীন হস্তশিল্প ডোকরা। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বিকনা শিল্প ডাঙ্গা এই শিল্পের ঠিকানা। এখানে বাস প্রায় ১০০ পরিবারের। পিতল গলিয়ে ডোকরা শিল্পকর্ম এই শিল্পীপাড়ার শিল্পীদের প্রধান জীবিকা। ডোকরা শিল্পকর্মে দেব-দেবীর মূর্তি থেকে আদিবাসী জীবনযাত্রার ছবি, জীবজন্তু মূর্তি থেকে নানা মডেল, মেয়েদের রকমারি ডিজাইনের গহনা এমন নানান জিনিসপত্র ফুটে উঠে শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায়। গ্রামজুড়ে চরম ব্যস্ত থাকেন শিল্পী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। দিনভর জীবন-জীবিকার টানে এই কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত এই গ্রাম।


বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্প


একটা সময় এই শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রাখা শিল্পীদের কাছে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে নানা সরকারি সহযোগিতায় এই শিল্প গ্রাম ও গ্রামের শিল্প আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। সরকারি উদ্যোগে গ্রামের ৮৪ জন শিল্পী পরিবার পাট্টা পেয়েছেন। এবার এই শিল্পগ্রাম মডেল গ্রাম হিসেবে সেজে উঠছে। খুশি শিল্পী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। পাশাপাশি সরকারিভাবে ডোকরা শিল্পসামগ্রী বিক্রির বাজার তৈরিরও আবেদন গ্রামের শিল্পীদের।


এই শিল্পগ্রামে এসে শিল্পীদের কাছ থেকে সরাসরি নানা শিল্পসামগ্রী কিনে খুশি পর্যটকরাও। গ্রামের সাজানো পরিবেশ, শিল্পকর্ম, শিল্পীদের ব্যবহার দেখে আপ্লুত পর্যটকরা।


সেজে উঠেছে ডোকরা গ্রাম


বিকনা শিল্পগ্রামের রূপ ফিরিয়ে মডেল শিল্পগ্রাম গড়ে তোলা মূল লক্ষ্য জেলা পরিষদের। গ্রামের শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবি দাবিদাওয়া পূরণ করা হচ্ছে বলে দাবি জেলা পরিষদের। গ্রামের প্রবেশ পথে সুসজ্জিত তোরণ চিনিয়ে দেবে ডোকরা গ্রামকে। জল, আলো পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্য দিয়ে গ্রাম সাজানোর প্রস্তুতি চলছে। গ্রামের আকর্ষণ বাড়লে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে, শিল্পীদের শিল্পকর্মের শ্রীবৃদ্ধি হবে, এমনটাই মনে করছে বাঁকুড়া জেলা পরিষদ।


আরও পড়ুন চাঁদবাক দামোদরের চর থেকে উদ্ধার বিরল প্রজাতির কচ্ছপ