পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: পঞ্চায়েতের (Panchayat) ২০ টি আসনের মধ্যে সবকটি তৃণমূলের দখলে। তারপরও গোষ্ঠীদ্বন্দ এড়াতে পারল না তৃণমূল (TMC)। পঞ্চায়েতে বোর্ড (Panchayat Board) গঠন হতেই তা চলে এল একেবারে প্রকাশ্যে। দলের প্রস্তাবিত পঞ্চায়েত প্রধানকে ভোটাভুটিতে হারিয়ে প্রধান হলেন দলেরই আরেক সদস্য। ঘটনা বাঁকুড়ার (Bankura) বড়জোড়া ব্লকের বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে। এই ঘটনায় ওই পঞ্চায়েতের নব নির্বাচিত প্রধান ও দলের অঞ্চল সভাপতি সহ তিনজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিল তৃণমূলের বিষ্ণুপুর জেলা নেতৃত্ব।
রাজ্যে সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়িটি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল প্রার্থীরা। বোর্ড গঠনের আগে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হিসাবে নব নির্বাচিত বিবেক শী ও উপ প্রধান হিসাবে শীলা রুইদাসের নাম প্রস্তাব করে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের তরফে তা লিখিত আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু ১১ আগষ্ট বোর্ড গঠনের সময় নির্বাচিত এক সদস্য দলের সেই নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে প্রদীপ পালের নাম প্রধান হিসাবে প্রস্তাব করেন। দলের নির্বাচিত সদস্যদের একাংশ প্রস্তাব সমর্থন করলে প্রধান পদে ভোটাভুটি হয়। ভোটে প্রদীপ পালের কাছে তৃণমূলের প্রস্তাবিত প্রধান পদ প্রার্থী বিবেক শী ১০ - ৯ ভোটে পরাজিত হলে প্রদীপ পাল প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এরপরই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে ১৪ জন দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ করে জানান, দলের নির্বাচিত সদস্য প্রদীপ পাল, শেখ কুতুবউদ্দিন ও এলাকার অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত কর, দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রদীপ পালকে প্রধান হিসাবে নির্বাচিত করার জন্য মানসিক চাপ দিচ্ছিল ও ভয় দেখিয়েছিল। সেই চাপের কাছে মাথানত করে তাঁদের একাংশ বোর্ড গঠনের সময় বাধ্য হয়ে প্রদীপ পালকে সমর্থন করেছিলেন। এই অভিযোগ পেতেই তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসে।
আরও পড়ুন, জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল অনুব্রত-র, কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেয়ে সুকন্যা
তড়িঘড়ি অভিযুক্ত নব নির্বাচিত প্রধান প্রদীপ পাল, পঞ্চায়েত সদস্য শেখ কুতুবউদ্দিন ও তৃণমূলের বেলিয়াতোড় অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত করকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে ওই তিনজনকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন জবাব সন্তোষজনক না হলে সেক্ষেত্রে ওই তিন জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দলের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ মানতে চাননি। বিজেপির কটাক্ষ, 'এসবই অভিনয়। কাটমানি কে কত দিতে পারবে তা নিয়ে গন্ডগোলের জের।'