পার্থপ্রতিম ঘোষ, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: ভবানীপুরে (Bhowanipore Twin Murder) হাড় হিম করা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে গন্ডগোল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ১ লক্ষ টাকা ফেরত চাওয়াতেউ গুজরাতি দম্পতিকে গুলি করে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে দাবি তাদের। কিন্তু যে আত্মীয়র টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল, যিনি দম্পতিকে খুনের চক্রান্ত এঁটেছিলেন, তিনি ভিন্ রাজ্যে পালিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।  তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গেই খুনের দিন ঘটে যাওয়া হাড়হিম করা ঘটনাবলী সামনে এনেছে পুলিশ।


মূলচক্রী ভিন্ রাজ্যে পালিয়েছেন!


কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীতকুমার গোয়েল জানিয়েছেন (Kolkata Police Commissioner), ২০১৯ সালে নিহত গুজরাতি দম্পতির থেকে তাঁদের মেজ জামাইয়ের দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। টাকা ধার নেওয়ার কিছু দিন পরে করোনায় তিনি মারা যান। এর পর থেকেই তাঁর ভাইকে টাকা শোধ করার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন অশোক শাহ। তাতেই খুনের পরিকল্পনা করেন ওই পরিচিত।


বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে কমিশনার গোয়েল বলেন, "১ লক্ষ টাকা মত নিয়েছিল, আমাদের যা বলেছে, তাতে ২০১৯ সালে টাকাটা নিয়েছিল। টাকা ফেরত দিচ্ছিল না। জেরায় আমাদের যেটা মনে হয়েছে, এরা এই ধরনের ঘটনার জন্য অনেকদিন ধরে পরিকল্পনা করছিল। এটা পরিকল্পনামাফিক খুন। নিহতের উপর ওর কোনও কারণে মারাত্মক রোষ ছিল।"


আরও পড়ুন: Bhowanipore Couple Murder : "পূর্ব পরিকল্পিত ছক", ভবানীপুরে গুজরাতি দম্পতিকে খুনের কিনারা ; গ্রেফতার ৩


পুলিশ সূত্রে দাবি, রেকি করতে আততায়ীদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনার আগের দিনও ভবানীপুরের এসেছিলেন ওই পরিচিত। ঘটনার দিন বাসে করে এসে এক্সাইডে নেমে,পায়ে হেটে ভবানীপুরে আসে আততায়ীরা। সোমবার দুপুরে বাড়িতে ছিলেন অশোক ও রশ্মিতা শাহ। দরজার আইহোল দিয়ে দেখেন পরিচিত একজন এসেছেন। তারপর দরজা খুলে নিয়ে যান ভিতরে। সোফায় বসতে দেন, গলা ভিজিয়ে নিতে জলও দেন। অভিযুক্ত মাস্টারমাইন্ড জানান, পরিচিত বন্ধু এসেছে। তাদের ভিতরে ঢোকান। তারপর ঘরে নৃশংস্য ঘটনা।


পুলিশ সূত্রে দাবি, শাহ দম্পতিকে কুপিয়ে খুনের পরিকল্পনা ছিল আততায়ীদের। নিঃশব্দে কাজ করে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও, অশোক শাহকে কোপানোর সময় ছুরির হাতল ভেঙে যায়। তাই রশ্মিতা শাহকে গুলি করে খুন করতে বাধ্য হয় আততায়ীরা।


১ লক্ষ টাকার ধার নিয়ে খুন!


পুলিশের দাবি, শাহ-দম্পতির ফ্ল্যাট থেকে অনেক টাকা পাওয়া যাবে, এই কথা বলে আততায়ীদের এনেছিলেন ওই পরিচিত। তাঁর বাজারে অনেক দেনা ছিল। তিনি ভেবেছিলেন, শাহ দম্পতির বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে সেই দেনা মেটাবেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।