কলকাতা: প্রকাশ্যে নেতাকে বোমা ছুড়ে খুন থেকে শুরু। তার পর জতুগৃহে ১০ জনের মৃত্যুর খবর। তা নিয়ে সোমবার থেকে খবরের শিরোনামে রামপুরহাট (Rampurhat Fire)। এ বার সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও (Jagdeep Dhankhar)। রাজ্যের মুখোসচিবের কাছ থেকে এই নিয়ে রিপোর্ট তলব করলেন তিনি। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন ধনকড়। রাজ্যে আইনের সংস্কৃতি নেই বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।


বীরভূমের (Birbhum Fire) রামপুরহাটের ঘটনায় নতুন করে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূল নেতার খুনের বদলা নিতে পরের পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তা অস্বীকার যেমন করেছে, তেমনই দলের নেতা ভাদু শেখের মৃত্যুর জন্য বিজেপি-কে দায়ী করেছে জোড়াফুল শিবির। পাল্টা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা সামলাতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছে বিজেপি। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনাও ফের উস্কে দিয়েছে তারা।


এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার টুইটারে রামপুরহাট নিয়ে মন্তব্য করেন ধনকড়। তিনি লেখেন, ‘বীরভূমের রামপুরহাটে ভয়ঙ্কর ধরনের হিংসা, অগ্নিসংযোগ, ব্যাভিচারে প্রমাণিত যে, এই রাজ্যে সন্ত্রাসের সংস্কৃতি চলছে, আইনের শাসন নেই। ইতিমধ্যেই আট জনের প্রাণ গিয়েছে। মুখ্যসচিবের কাছ থেকে জরুরি ভিত্তিতে তথ্য চেয়েছি। শোকগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সমবেদনা।’





আরও পড়ুন: Rampurhat Fire : 'রাজনৈতিক কারণে এই সংঘর্ষ নয়', ৮ জনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা রাজ্য পুলিশের ডিজির


সোমবার রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে একটি দোকানে চা খাওয়ার সময় আক্রান্ত হন সেখানে তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে একদল দুষ্কৃতী। তাতে মৃত্যু হয় ভাদু শেখের। সেই ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, সেই সময়ই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মোটর সাইকেলে চেপে চার-পাঁচ জনের একটি দল বকটুই গ্রামে চড়াও হয় (Birbhum News) বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, দেদার ভাঙচুর চালায় তারা।


তার পর একে একে কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে পুড়ে ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়। হামলাকারীরা নিহত তৃণমূল নেতার অনুগামী এবং তারা রাতভর তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা (Rampurhat News)। শাসনের কাছে এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।  যদিও দুই ঘটনার মধ্যে কোনও সংযোগ রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। 


গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্য বিজেপি-র (BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তাঁর অভিযোগ, "রাজ্যে অরাজকতার শাসন চলছে। পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করা উচিত। ১০ জনকে জলজ্যান্ত পুড়িয়ে মেরে দেওয়া হল। এরা আবার কথায় কথায় গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ দেখায়। বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে ইস্তফা দেওয়া উচিত মুখ্যমন্ত্রীর। ওঁর অপদার্থতা এটি। এত বড় ঘটনা ঘটল, অথচ পুলিশ-প্রশাসন জানতে পারল না! এ রাজ্য ধঈরে ধীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে আমার।"