পরিতোষ দাস, বীরভূম: নানুরের দাপটে তৃণমূল নেতা। এবার তিনিই বেসুরো। দলের নেতাদের সমালোচনায় সরব বীরভূমের (Birbhum) নানুরের দাপুটে তৃণমূল (TMC) নেতা কাজল শেখ। ক্ষমতায় এলেও কর্মীদের বিপদে পাশে দাঁড়ায়নি তৃণমূল, এমনই অভিযোগ কাজল শেখের। তৃণমূলের একটি কর্মিসভার ঘটনা। ওই কর্মিসভায় হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হা এবং নানুরের বিধায়ক। কাজল শেখ নানুরের চারকল গ্রামে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক। তিনি কেতুগ্রামের (Ketugram) বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজের ভাই।


কী অভিযোগ কাজলের:
বীরভূমে নানুরের (Nanur) চারকল গ্রাম অঞ্চলে সম্মেলন হয় তৃণমূলের। সেখানেই কাজল শেখ বলেন, 'তৃণমূল ক্ষমতায় এলেও কর্মীদের বিপদে পাশে দাঁড়াননি দলের নেতারা। উল্টে তৃণমূল নেতা, কর্মীদের খুনে জড়িতদের দলে নেওয়া হয়েছে।' নীচুতলা ও পুরনো কর্মীরা দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলেও কাজল শেখের দাবি। তিনি আরও বলেন, 'সিপিএমকে হঠাতে নানুরের বুকে যে সমস্ত কর্মীরা শহিদ হয়েছেন। আজ দলের নেতারা সেই সমস্ত পরিবারের কেউ খোঁজ রাখেন না। যাদের বলিদানে তৃণমূল নানুরের ক্ষমতায় এলো সেই সমস্ত পরিবারগুলোকে আজ তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন। যে সমস্ত লোকজনেরা একসময় তৃণমূল নেতাদের খুন করেছেন, দলের কিছু নেতা তাঁদেরই দলে নিয়েছেন। নানুর বিধানসভার মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে লড়াই করতে জানে তাই  ২০১১ সালে যিনি বিধায়ক ছিলেন ২০১৬ সালে তিনি গোহারা হেরেছেন। তার কারণ একটাই তিনি সেই হার্মাদদের নিয়ে দল গঠন করেছিলেন। আর তাদেরকে সামনে নিয়েই ঘুরে ছিলেন।' কাজল শেখ তৃণমূল নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। ২০১১ সালের আগে তাঁদের দলের কর্মীদের ও পরিবারের সদস্যদের যারা খুন করেছে, সেই লোকগুলিকে যদি এই দলে ঠাঁই দেওয়া হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে নানুর ব্লকের বাসিন্দারা তার ফল মিলিয়ে নেবেন। তাঁর ক্ষোভ, যখন তিনি রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন, কোর্টে মামলা লড়েছেন, নানুর ব্লকের কোনও নেতা কখনও খোঁজ নেননি। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও নানুরের বর্তমান বিধায়ক বিধান চন্দ্র মাঝি। উপস্থিত ছিলেন নানুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। তাঁদের সামনেই এমন কথা বলেন কাজল।  


বিজেপির কটাক্ষ: 
দলের প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছেন তৃণমূল নেতারাই, কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, 'তৃণমূল নেতাদের প্রতি তৃণমূল নেতাদেরই বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছে। তাই তাঁদের মুখে আত্মসমালোচনার কথা শোনা যাচ্ছে আজ। সময় হলেই মানুষ ঠিক জবাব দেবে। নানুরের প্রকৃতপক্ষে যাঁরা শহিদ পরিবার তাঁরাই আজ বঞ্চিত। তাই তাঁদের গলাতেই শোনা যাচ্ছে বিষাদের সুর। তৃণমূলের উপর তলার নেতারা নীচুতলার কর্মীদের কোনও কথা শোনেন না।'


আরও পড়ুন: বিমানবন্দর থেকে বড়বাজার, একই দিনে বাজেয়াপ্ত দেড় কোটির সোনা