বীরভূম: বগটুই (bogtui) গ্রামে লালন শেখের (Lalan sheikh) বাড়িতে গেল চার সদস্যের ফরেন্সিক দল (forensic team)। ১০ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত লালনের বাড়ি অতীতে সিল করে দেয় সিবিআই (CBI)। আদালতের নির্দেশে গত ১৩ ডিসেম্বর সিল খুলে দেওয়া হয়। ওই বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা ও সোনার গয়না-সহ মূল্যবান জিনিস খোয়া গিয়েছে বলে ১৬ ডিসেম্বর রামপুরহাট থানায় অভিযোগ করেন লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। ওইদিনই লালনের বাড়ি সিল করে দেয় পুলিশ। এদিন ওই বাড়িতে গিয়ে সিল খুলে তদন্ত শুরু করল ফরেন্সিক দল।


প্রেক্ষাপট...
সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম গোটা রাজ্য। তার সঙ্গেই লালনের সিল করা বাড়ি থেকে লোপাট হয়েছে একাধিক মূল্যবান সামগ্রী, এমন অভিযোগও করা হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই গত সপ্তাহেই রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিহত লালন শেখের স্ত্রী। অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সূত্রের খবর, লালন শেখের স্ত্রীর দাবি তাঁদের বাড়ি সিবিআই সিল করে দিয়েছিল। এর আগেও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন লালন শেখের স্ত্রী। 'মামলা ধামাচাপা দিতে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল সিবিআই', বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন লালনের স্ত্রী। খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে লালনকে, এমনও অভিযোগ করেছিলেন লালনের স্ত্রী।


সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সেই ঘটনায় হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে যে 'সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না সিআইডি'। আদালতের নির্দেশ ছাড়া চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করতে পারবে না সিআইডি। অভিযোগপত্র লেখার ক্ষেত্রে লালন শেখের স্ত্রীকে কেউ সাহায্য করে থাকতে পারেন। লালন শেখের স্ত্রীকে মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দিয়ে মন্তব্য বিচারপতির। 'কিছু মামলায় রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অসহযোগিতা করার, বিভ্রান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার মামলাও বিচারাধীন, মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতির। শরীরে আঘাতের কিছু চিহ্ন আছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখে মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতির।  


আগে যা হয়েছে:
গত ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে, তৃণমূলের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরই বগটুই গ্রামে সংগঠিত হয় প্রাণঘাতী হামলা! জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক বাড়ি! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মোট ১০ জনের। সিবিআই সূত্রে দাবি, হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিল নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু-ঘনিষ্ঠ লালন শেখ। ঘটনার পর ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দেয় লালন। ৩ ডিসেম্বর বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৪ তারিখ আদালতে তোলা হলে ৬ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় রামপুরহাট মহকুমা আদালত। ১০ তারিখ ফের তাকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে হলে বিচারক লালনকে ফের তিন দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।


আরও পড়ুন:নন্দনে ছবি দেখানো মুখ্যমন্ত্রীর হাতে নেই, প্রজাপতি বিতর্কে মুখ খুললেন ফিরহাদ