ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, নান্টু পাল ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম: তৃণমূল (TMC) ছেড়েই নলহাটিতে (nalhati) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu adhikari) সভায় পৌঁছে গেলেন একদা অনুব্রত মণ্ডল (anubrata mondal) ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বিপ্লব ওঝা। তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই শুভেন্দুর সভায় তাঁকে দেখা যাওয়ায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে।


কেন দলের সঙ্গত্যাগ?
অভিমান এবং ক্ষোভের কারণে বীরভূমে দল ছাড়লেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা, এমনই দাবি তাঁর। জেলা পরিষদের সদস্য ও বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি বিপ্লব ওঝার দাবি, গত একবছর ধরে দলের কাছে তিনি ব্রাত্য। দল কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে ডাকে না। এর মধ্যে গরুপাচারকাণ্ডে জেলে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাই সব মিলিয়ে দলের প্রতি ক্ষোভ ও অভিমানে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেতা। যদিও বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'গুরুত্ব পেয়েও দল ছাড়ছেন'। অন্য় দিকে, বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার বক্তব্য, 'তৃণমূলে সম্মান পাচ্ছেন না, বিজেপিতে এলে পাবেন।'


প্রেক্ষাপট...
গরু পাচার মামলায় CBI-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলে নানা জল্পনা উস্কে দিয়েছেন, তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল। এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যখন জেলায় সংগঠন মজবুত করতে মরিয়া শীর্ষ নেতৃত্ব, তখনই বীরভূমে জোরাল ধাক্কা খেল তৃণমূল। দল থেকে ইস্তফা দিলেন জেলার অন্যতম সহ সভাপতি বিপ্লব ওঝা। বলেন, 'এই মুহূর্তে বলতে পারি, তৃণমূলের সংস্পর্শ ত্যাগ করছি। বিগত এক বছর ধরে আমি দেখছি যে তৃণমূল আমার সম্পর্কে একটা অন্য মনোভাব পোষণ করছে। মিটিং, মিছিল কোনও কর্মসূচিতে আমাকে ডাকা হয় না। আমাকে বাদ রেখেই কাজ করছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিলাম। ভাবলাম তৃণমূলের আমাকে প্রয়োজন নেই। কংগ্রেস ছেড়ে গত ২০০৯ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিপ্লব ওঝা। জেলা সহ সভাপতির দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তিনি জেলা পরিষদের সদস্য। নলহাটি পুরসভায় দু-বার চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন।
মূলত অনুব্রত মণ্ডলের সান্নিধ্যে থেকেই দলে গুরুত্ব বাড়ে বিপ্লব ওঝার। কিন্তু এক বছর ধরে, ক্রমেই তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়ছিল বলে তাঁর দাবি। এরপরই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বিপ্লব।সেই সঙ্গে জিইয়ে রাখলেন অন্য দলে যোগদানের সম্ভাবনাও। বললেন, রাজনীতি যখন করি, তখন বিকল্প খোলা থাকছে। তবে কোন দলে যাবেন সেই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত তিনি নেননি। বলেছেন, 'সর্বভারতীয় দল তো আছে। কংগ্রেস আছে, বিজেপি আছে। তবে বামফ্রন্ট আছে। মানুষের স্বার্থে সর্বভারতীয় দলে যোগ দিতে পারি।'


আরও পড়ুন:শুরুতে বেসরকারি হাসপাতালেই মিলবে নেজাল ভ্যাকসিন, পরে সরকারি জায়গায়, দামে ফারাক অনেকটাই