ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: একমাসের মধ্যে ফের বীরভূমের (Birbhum) নানুর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার (Firearms Rescue)। এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)। ধৃত জেরমান শেখ নানুরের বেনেরা গ্রামের বাসিন্দা। উদ্ধার হয়েছে একটি অটোমেটিক পিস্তল, দুটি দেশি পিস্তল ও ৮ রাউন্ড গুলি। পুলিশের দাবি, 'ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে অস্ত্র ঢুকছে বীরভূমে।' 


বীরভূমে এক মাসের মধ্যে নানুরে আবার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। এবার  একটি ৭.৬৫ এমএম অটোমেটিক পিস্তল, দুটি ৮এমএম  দেশী পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড গুলি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ধরনের আধুনিক অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নানুরের বেনেরা গ্রামের জেরমান শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  এর আগে গত এপ্রিলের কাছে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৯ রাউওন্ড গুলি উদ্ধার করে ছিল পুলিশ। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর নানুর থানার পাকুরহাঁস গ্রামে অভিযান চালিয়ে  একটি ৯এমএম অটোমেটিক পিস্তল,  দুটি ৭.৬৫ এমএম অটোমেটিক পিস্তল,  একটি মাস্কেট, ১৫ রাউন্ড গুলি, ১০ কেজি গান পাউডার উদ্ধার করে ছিল নানুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খন্ড থেকে এবং মুর্শিদাবাদ থেকে এই অস্ত্র বীরভূম ঢুকছে। মুর্শিদাবাদ থেকে অস্ত্র নতুনহাট ব্রীজ হয়ে নানুর ঢুকছে। একই ভাবে খাড়খন্ড থেকে কখনো বাসে বা ট্রেনে অস্ত্র ঢুকছে বীরভূমে।


তবে এই প্রথমবার নয়, বীরভূমের নানুর থেকে এর আগে একাধিকবার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সফিক শেখকে গ্রেফতার করে নানুর থানার পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি ৯ মিমি পিস্তল, দুটি ৭.৬৫ মিমি  পিস্তল, ৫ রাউন্ড ৮মিমি কার্তুজ, ২ রাউন্ড ৯ মিমি কার্তুজ, ৬ রাউন্ড ৭.৬৫ মিমি কার্তুজ, ৬ কেজি গান পাউডার, ৪ কেজি ইয়েলো গান পাউডার উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের বীরভূমে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। মঙ্গলবার নলহাটি থানার নাচপাহাড়ি গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক অস্ত্র। পাশাপাশি বীরভূমের সাঁইথিয়ার গ্রামে দু-পক্ষের বোমাবাজিতে হাত-পা উড়ে যায় এক যুবকের। গুরুতরভাবে জখম হয় এক নাবালকও।  নাচপাহাড়ি গ্রাম থেকে উদ্ধার হয় ২টি নাইন এমএম, একটি ওয়ান শাটার ও ১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ১ জন।  কী কারণে এই অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছিল ওই ব্যক্তি। কোথায় যাচ্ছিল, তদন্তে নামে পুলিশ। কারও কাছে কী অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা ছিল? সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সিউড়িতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেছিলেন, 'ঝাড়খণ্ড থেকে প্রচুর অস্ত্র ঢুকছে বীরভূমে।' আর এবার সেই  বীরভূম জেলাতেই অস্ত্র উদ্ধারে একই দাবি পুলিশের।


আরও পড়ুন, ১,৬৯৪ শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে এবার বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ !


এদিকে পর পর অস্ত্র উদ্ধার হতেই জেলা জুড়ে নাকা চেকিং শুরু করেছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান থেকে নতুনহাট অজয় নদীর ব্রীজের কাছে নানুর ঢোকার মুখে নানুর থানার ওসি শেখ ইজরাইল এর নেতৃত্বে নাকা চেকিং চালানো হয়। চার চাকা গাড়ি-র পাশাপাশি টোটো এবং বাইকে তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশের সন্দেহ, স্থানীয় এজেন্টদের সাহায্যে এই অস্ত্র জেলায় ঢুকছে। এই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচারকারীরা যুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি এর আগে অস্ত্র উদ্ধার হয় মুর্শিদাবাদেও। গ্রেফতার এক। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সাগরদিঘি থানা এলাকার মোড়গ্রামের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নাকা তল্লাশি চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয় ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ রাউন্ড গুলি। ধৃত তাবারুক শেখ লালগোলার বাসিন্দা। কোথা থেকে অস্ত্র আনা হয়েছিল, কোথায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও রেজিনগর থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্র কেনাবেচার অভিযোগে ২৯ অক্টোবর, ডোমকল থেকে এক মিষ্টি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। ৪ নভেম্বর, রেজিনগরে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হয় বাবা-ছেলে। এরপর ৯ নভেম্বর, ফের ডোমকল থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয় ২ অস্ত্র বিক্রেতাকে।