গোপাল চট্টোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন: তিন ছাত্রকে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের অনশন অবস্থান আজ ১১  দিনে পড়ল। অধ্যাপক, আশ্রমিক সহ কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন বিভিন্ন ভবনের গেটের তালা খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের আবেদন, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হোক।


গত সপ্তাহে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর বাড়ির সামনে কোনওরকম বিক্ষোভ করা যাবে না। প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসস্থান সহ যেখানে যত তালা ঝোলানো ছিল, সব তালা ভেঙে দিতে হবে শান্তিনিকেতন থানাকে। আদালত জানায়, ক্যাম্পাস থেকে ৫০ মিটার দূরে গিয়ে আন্দোলন করতে পারবেন পড়ুয়ারা। হাইকোর্ট নির্দেশে বলে,  বিশ্বভারতীর কোনও কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না।  উপাচার্যের নিরাপত্তার জন্য ৩ জন পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করতে হবে।  চালু করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সমস্ত সিসি ক্যামেরা। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে শান্তিনিকেতন থানাকে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট।


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে ভর্তি এবং ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু, ৩ পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনের রেশ অব্যাহত শান্তিনিকেতনে। সোমবারই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে ইমেল করে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের একটি সংগঠন। বিশ্বভারতীর ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ করা হয়, ছাত্র আন্দোলনের যুক্তি দিয়ে তাঁদের বেতন বন্ধের চেষ্টা করেছেন উপাচার্য। সংগঠনটির আরও অভিযোগ, উপাচার্যের প্রতিহিংসামূলক আচরণের জন্য একের পর কর্মী, অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের শো-কজ, সাসপেন্ড, এবং বহিষ্কার করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ঘুষি মারার অভিযোগ


বিশ্বভারতীর সাসপেন্ডেড সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, উনি যে সর্বনাশ করতে চেয়েছিলেন, আন্দোলনের ধুয়ো দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বেতন, ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চেয়েছিলেন উপাচার্য, এগুলো ধর্মেন্দ্র প্রধানকে জানিয়েছি। বিশ্বভারতীর ৩ পড়ুয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ১০ দিন ধরে আন্দোলন চলছে। অনশনে বসেছেন এক শিক্ষক ও এক ছাত্রী।এদিন আন্দোলনকারীদের সংহতি জানায় বীরভূমের একাধিক নাট্য দল। নাট্যকর্মী জুলফিকার জিন্না বলেন, যে ছাত্রগুলিকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরাতে হবে, অধ্যাপকদের সাসপেনশন তুলতে হবে, উপাচার্যে পদে তাঁর থাকার। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতিও নিচ্ছে পড়ুয়ারা। সেই লক্ষ্যে শুরু হয়েছে অর্থ সংগ্রহের প্রক্রিয়া।


আরও পড়ুন:পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে ঘাসফুল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে