গোপাল চট্টপাধ্যায়, বীরভূম: শারদীয়া উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। পুজোর প্রস্তুতিতে কোমর বাঁধছে উদ্যোক্তা থেকে বনেদি বাড়িগুলো। তালিকায় রয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়িও। এবার ১২৬ বছরে পদার্পণ করবে এই পুজো। শোনা যায়, ১৮৯৫ সালে লাভপুরের মিরাটি গ্রামে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পিতামহ জঙ্গল মুখোপাধ্যায়।


পরিবারের একজনকে সরাসরি পুজোয় সামিল হতেই হবে, শুরু থেকে চলছে এই রীতি। সেই প্রথা মেনেই প্রতিবছর এই পুজোয় অংশ নিতেন খোদ প্রণব মুখোপাধ্যায়। পুজোর সমস্ত কাজ থেকে মন্ত্র ও চণ্ডীপাঠ, নিজেই করতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। কখনও দেশের অর্থমন্ত্রী কখনও বিদেশ মন্ত্রী, কখনও বা বাণিজ্যমন্ত্রী, এমনকি রাষ্ট্রপতি হয়েও শত কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও শিকড়ের টানে বার বার ফিরে এসেছেন গ্রামের বাড়ির এই পুজোয়। প্রতিবছর মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর আড়ম্বর ছিল দেখার মতোই।


স্থানীয়দের কাছেও মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো এক অন্য অনুভূতি। প্রতিবার নিয়ম মেনে মহাষষ্ঠীর দিন দুপুর নাগাদ দিল্লি থেকে মিরাটির এই বাড়িতে এসে পৌঁছতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পুজোর আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের আনাগোনা। কড়া নিরাপত্তাবলয় থাকত বাড়ির চারপাশে।  দিল্লি থেকে ফিরেই পুজোয় বসতেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।


চারদিন মহাআড়ম্বরে চলত মুখোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গা পুজো। ভিড় জমাতেন গ্রামের মানুষও। তবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর খানিক জৌলুস হারিয়েছে তাঁর বাড়ির পুজো। বাবার মৃত্যুর পর প্রথা মেনে বাড়ির দুর্গা পুজোয় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। জনসমাগম কিছুটা কম হলেও, পুজোর রীতিনীতিতে কোনও ভাটা পড়েনি। তাই অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। বাড়ির সামনের কাঁদর নদী থেকে ঘট ভরে জল এনে পুজোর সূচনা করবেন প্রণব পুত্র অভিজিৎ।


আরও পড়ুন: পাহাড়ের গুহায় পূজিত হন লালজলের 'দেবীদুর্গা', রোমহর্ষক সেই উৎসবের প্রাচীন কাহিনি


আরও পড়ুন: দেবীর নেই দশহাত-অস্ত্র, নেই মহিষাসুর, 'অভয়া' মূর্তিতে পূজিত হন বীরভূমের এই দুর্গা