উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে, গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধেই সরব হলেন বিজেপি বিধায়ক। ফের একবার সামনে চলে এল পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি। বিধানসভায় এই দাবি তুলে অবস্থানে বসলেন কার্শিয়ঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। পোস্টার হাতে এদিন, বিধানসভার অম্বেডকর মূর্তির সামনে অবস্থানে বসেন কার্শিয়ঙের বিধায়ক।
পোস্টারে লেখা, 'আমরা গোর্খারা পর পর ৩ বার বিজেপিকে লোকসভায় জিতিয়েছি। কারণ, তারা আমাদের ২টি রাজনৈতিক দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। চলতি লোকসভার মেয়াদ আর মাত্র ৯ মাস, মাত্র একটি অধিবেশন বাকি রয়েছে। তাই, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে আমরা প্রতিশ্রুতি নয়, কাজ চাই।' কার্শিয়ংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, 'প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম, আমরা পূরণ করতে পারলাম না। আমি নিজেই প্রশ্ন করছি, কেন্দ্রকেও করছি, রাজ্য সরকারকেও করছি। আমি ডেলিবারেশন চাইছি।'
পৃথক রাজ্যের দাবিতে দীর্ঘ কয়েক দশকের আন্দোলনের সাক্ষী পাহাড়। কখনও যার নেতৃত্বে দিয়েছিলেন GNLF-এর প্রতিষ্ঠাতা সুবাস ঘিসিং। কখনও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিমল গুরুং। বাম জমানার শেষ দিকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড়। এই প্রেক্ষাপটেই ২০০৯ সালে বিজেপির সঙ্গী হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের সমর্থনেই ২০০৯ থেকে একটানা দার্জিলিং লোকসভা আসনে জিতছে পদ্ম শিবির। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঁক এসেছে পাহাড়ের রাজনীতিতেও। বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে, তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলে পাহাড়ে ফেরেন বিমল গুরুং। অন্যদিকে, মোর্চা ছাড়ার পরে একদা দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড, GTA-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিনয় তামাং এখন তৃণমূলে। এই অবস্থায়, এবার বিজেপি বিধায়কের মুখেই উঠল পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি।
লোকসভা ভোটের আগে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে বিজেপি কী অবস্থান নেয়, সেদিকেই নজর সকলের।
কিছুদিন আগেই দার্জিলিংয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। সেখানে খুব ভাল ফল করেছে অনীত থাপার দল। তাদের সহযোগী ছিল তৃণমূলও। উল্টোদিকে জোট ছিল, যেখানে ছিল জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টি এবং বিজেপি। তারপরেই এভাবে গোর্খাল্যান্ড ইস্যু উঠে এলে। অবশ্য এর আগেই বঙ্গভঙ্গের ইস্যু তুলেছিলেন বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা।