কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) পুকুরে উদ্ধার হওয়া জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) মোবাইল ফোন থেকে ফের মিলল বিস্ফোরক তথ্য।  'টাকা দিয়েও হয়নি কাজ, ফেরত চাওয়ায় চাকরিপ্রার্থীকে হুমকি জীবনকৃষ্ণ সাহার', সিবিআই সূত্রে (CBI) এমনটাই দাবি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, টাকা ফেরত চাইলে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দেন বড়ঞার বিধায়ক। ২০২২ সালের অক্টোবরে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট উদ্ধার চাকরিপ্রার্থীর। টাকা ফেরত পেতে অনুরোধ জানালেই চাকরিপ্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে।


 'টাকা ফেরত চাওয়ায় চাকরিপ্রার্থীকে হুমকি'


নিয়োগ দুর্নীতিতে এক চাঞ্চল্য়কর কথপোকথন সামনে এসেছে।সিবিআই সূত্রে পাওয়া এই তথ্য় অনুযায়ী, আরও বেশি করে জালে জড়িয়ে পড়লেন ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। সিবিআই সূত্রে পাওয়া এই হোয়াটস অ্য়াপ চ্য়ান অনুযায়ী, চাকরিপ্রার্থী বলছেন,  স্য়র, আমার টাকার দরকার। চারদিক থেকে খুব চাপ আসছে।  উত্তরে জীবনকৃষ্ণ সাহা, বলছেন, আমি অর্ধেক টাকা দিয়েছি। বাকি টাকার জন্য় ধৈর্য ধরতে হবে। বারবার ফোন করলে কিন্তু গ্রেফতার হতে হবে। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু তার পরও চাকরি দিতে পারেননি। আর চাকরিপ্রার্থী টাকা ফেরত চাইতেই, FIR দায়ের করে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে


৬৭ ঘণ্টার নাটকীয় টানাপোড়েন


চলতি বছরের ১৭ই এপ্রিল, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার আন্দিতে, নিজের বাড়ি থেকে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই সময়ই প্রমাণ লোপাটের জন্য়, নিজের ২টি মোবাইলই তিনি বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। এরপর ৬৭ ঘণ্টার নাটকীয় টানাপোড়েন। পুকুর ছেঁচে ২ টি মোবাইল ফোনই উদ্ধার করা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর,সেই ফোন থেকে উদ্ধার হয়েছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ চ্য়াট। 
আরও পড়ুন, জয়েন্টের র‍্যাঙ্ক কার্ডে কারচুপি, MBBS-র প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে এসে গ্রেফতার ছাত্রী


কী ছিল সেই চ্যাটে ?


যেখানে চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে সরাসরি টাকার লেনদেন নিয়ে কথা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। সিবিআই সূত্রে দাবি, প্রাথমিকের চাকরির জন্য় এক প্রার্থীর থেকে ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিনি।কিন্তু চাকরি হয়নি। সেই চাকরিপ্রার্থী জীবনকৃষ্ণের কাছে যখন টাকা ফেরত চান,তখন, জীবনকৃষ্ণের উত্তর, 'হ্য়াঁ দেব। এখন আমি আপনাকে ৬ দিচ্ছি। বাকিটা পরে দেব।' দিনটা গত বছরের ১১ই সেপ্টেম্বর। হোয়াটস অ্য়াপে চাকরিপ্রার্থী জিজ্ঞেস করছেন, 'পরে কবে স্য়ার? এরপর চাকরিপ্রার্থী বলেন, স্য়র, তাড়াতাড়ি দিলে ভাল হয়।' তখন জীবনৃকৃষ্ণ বেশ ধমকের সুরেই উত্তর দিচ্ছেন, 'একবারে দেব বলেছিলাম। এখন সবাই চাইছে। যারা পাবে সবাইকে অর্ধেক করে দিচ্ছি। তোমরটা এমন কিছু না। একজন ১৭ পাবে, তাকে ৭ দিতে হবে। তুমি ১২ পাবে। আসানসোল, সিউড়ি সবাই ১৭-১৮ করে পাবে। অর্ধেক দিয়েছি। শোনো, বেশি খিটিমিটি করলে কিছুই দেব না। যা পারবে করে নিও।'