কলকাতা: 'তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য দল পদক্ষেপ করলে কিছু যায় আসে না', আরও একবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তাঁর অভিযোগ, 'কংগ্রেসের বেশ কিছু অংশে তৃণমূলের দালালি করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।' রবিবার, কৌস্তভের এমন মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র জল্পনা দানা বেঁধেছে। তবে কি 'বিদ্রোহের মেঘ' তৈরি হচ্ছে রাজ্য়ের কংগ্রেসে? জল্পনা তুঙ্গে ওঠে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ায়। তিনি বলেন, 'ভালো তো। এমন বড় বড় বিপ্লবী রয়েছেন আমাদের দলে।' কিন্তু কার বিরুদ্ধে এই ইঙ্গিত কৌস্তভের? প্রদেশের জবাব,'কার বিরুদ্ধে আমি জানি না। আমরা তো দিনভর সকলের পোস্ট দেখে বেড়াই না।'


কী নিয়ে বিতর্ক? 
কংগ্রেস নেতা কৌস্তভের মতে, 'হয়তো নিজেদের আসন বাঁচাতে তৃণমূলের দালালি করছে। বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলের সঙ্গে জোট চায় না। লড়াই চায়। আমি কোনও নেতার প্রতি দায়বদ্ধ নই। কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধ।'এর পরই  বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে কোনও আসন সমঝোতা, জোট করা যাবে না। তৃণমূলকে চোর বললে দল যদি ব্যবস্থা নেয়, আমার কিছু করার নেই।' ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধিতার সুর চড়াতে জোট বেঁধেছে একাধিক দল যার মধ্যে রয়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএম। এখন প্রশ্ন হল, যেখানে বঙ্গ রাজনীতিতে শাসকের আসনে থাকা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নিরন্তর বিরোধিতার পথ নিচ্ছে কংগ্রেস-সিপিএম, সেখানে জাতীয় স্তরে এমন জোট কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে? সূত্রে খবর, এই নিয়ে বাংলায়, দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই চূড়ান্ত অসন্তোষ রয়েছে। বিশেষত, হালের পঞ্চায়েত ভোটে যে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল, তার পর স্থানীয় স্তরে এই ধরনের জোট কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস নেতার এমন মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা তুঙ্গে। কিন্তু কেন এখন এমন মন্তব্য করলেন তিনি?


প্রেক্ষাপট...
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই নতুন ওয়ার্কিং কমিটি গড়েছে কংগ্রেস। সেখানে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিং, রাহুল গান্ধীর পরই, ৫ নম্বরে নাম রয়েছে লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর। জায়গা পেয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সিও। অধীর ও দীপা, দু-জনেই তৃণমূলের প্রবল বিরোধী মুখ হিসেবে পরিচিত। তবে বিরোধীদের জোট 'ইন্ডিয়া' গঠনের পর থেকে, তৃণমূলের প্রতি কিছুটা সুর নরম করতে শোনা যায় অধীরকে। এমনকী, লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করায়, তাঁকে অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করার পর তৃণমূলকেও পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। আর এই প্রেক্ষাপটেই কংগ্রেসের নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা পেলেন অধীর। অন্যদিকে সম্প্রতি কংগ্রেসের তরফে ত্রিপুরা ও হিমাচলপ্রদেশের ভোটে দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে দীপা দাশমুন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে হিমাচলে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে কংগ্রেস। এবার দীপা দাশমুন্সিকে ওয়ার্কিং কমিটিতে আনল দল। ওয়ার্কিং কমিটিতে নাম রয়েছে সভাপতি নির্বাচনে খাড়গের প্রতিদ্বন্দ্বী শশী তারুর এবং রাজস্থানের সচিন পায়লটের নামও। ঠিক এমন সময়ই কৌস্তভের এমন মন্তব্যে অন্য তাৎপর্য পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। 


আরও পড়ুন:২৩ অগাস্ট থেকে বন্ধ থাকবে অমরনাথ যাত্রা, ঘোষণা সরকারের