শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: থিকথিকে ভিড় নিয়ে ব্রিগেডে সভা হয়েছে দিন কয়েক আগেই। সেখান থেকে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলের বিরুদ্ধেই হুঙ্কার দিয়েছিলেন CPM এবং তাদের যুব সংগঠন DYFI-এর নেতা-নেত্রীরা। তার পর এক সপ্তাহও কাটল না, লালশিবিরে ভাঙন ধরাল তৃণমূল। ব্রিগেডে DYFI-র সভার পাঁচ দিনের মাথায় জোড়াফুল শিবিরে যোগদান করলেন SFI-এর সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি, সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের শহর কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ও এক যুবনেতা। (Cooch Behar News)
গত রবিবার, DYFI-এর ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত না থাকলেও, মাসখানেক আগে DYFI-এর ডাকে কোচবিহার থেকে শুরু হওয়া DYFI-এর 'ইনসাফ যাত্রা'য় হেঁটেছিলেন জেলা কমিটির সদস্য কৌশিক ঘোষ এবং সাধারণ সদস্য বাপি দে। শুক্রবার ওই দু'জনই তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁদের হাতে জোড়াফুল পতাকা তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। শুধু দল পাল্টেই ক্ষান্ত হননি তিনি, লালশিবিরের উল্টো পথে হেঁটে CPM-BJP, দুই দলের মধ্যে 'সেটিং' রয়েছে বলেও দাবি করেছেন। (DYFI Brigade Rally)
তৃণমূলে যোগদানের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কৌশিক। দলত্যাগের কারণ জানতে চাইলে কৌশিক বলেন, "বিজেপি-কে হঠাতেই তৃণমূলের হাত ধরা। সিপিএম-এর নোংরামি। বিজেপি-র সঙ্গে লড়াই কোথায়? সেটিং।" দুই তরুণ নেতাকে দলে এনে উদয়ন বলেন, "ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যুব সমাজের ক্ষোভ জন্মায়। আজ যুব ছাত্ররা আমাদের দেল আসছেন। এতেই বোঝা যায়, আমরা সঠিক রাস্তায় হাঁটছি। আগামী দিনে এঁরাই নেতৃত্ব দেবেন।"
আরও পড়ুন: Shantanu Thakur: রোহিঙ্গা আনতে মায়ানমার পালিয়েছে শাহজাহান, পুলিশই পাঠিয়ে দিয়েছে, দাবি শান্তনুর
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই DYFI-এর তরফে কৌশিক এবং বাপিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোচবিহার জেলায় DYFI-এর সভাপতি শম্ভু চৌধুরী বলেন, "ওদের মনে হয়েছে, গিয়েছে। ও সভাপতি নয়। ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। 'ইনসাফ যাত্রা'য় ওরা তেমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছিল না। আবর্জনারা ডাস্টবিনে গিয়েছে।" তবে জেলা নেতৃত্ব বিষয়টিকে গা না করলেও, দুই তরুণ নেতার এই দলবদলে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
গত রবিবারই কলকাতার ব্রিগেডে জন সমাবেশ করে DYFI. মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে সামনে রেখে সভার আয়োজন হলেও, সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহমম্দ সেলিম, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ছাড়াও তরুণ নেতা সৃজন ভট্টাচার্য, শতরূপ ঘোষ এবং দীপ্সিতা ধররাও ছিলেন মঞ্চে। সভার আগে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আশীর্বাদও নিয়ে আসেন মীনাক্ষী। তার পর কার্যতই তিলধারণের জায়গা ছিল না ব্রিগেডে। কিন্তু ভিড়ের ওই প্রতিফলন ভোটবাক্সে হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছিল। সেই আবহেই লাল ছেড়ে জোড়াফুলে গেলেন দুই নেতা।