শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহারের (Cooch Behar) রাস উৎসব (Rash Festival)। সেই উৎসবকে ঘিরেই সম্প্রীতির (Festival of Harmony) অনন্য নজির। বছরের পর বছর ধরে রাস উৎসবের রাস চক্র তৈরি করে চলেছে এক মুসলিম পরিবার (Muslim Family)। ৩ পুরুষের ঐতিহ্য বজায় রাখার দায়িত্ব তাঁরই কাঁধে।


রাত-দিন সব এক। নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। একমনে কাজ করে চলেছেন আলতাফ মিয়া (Altaf Mia)। সামনেই রাস উৎসব, হাতে সময় নেই। কোচবিহারের (Cooch Behar) মদনমোহন মন্দিরের (Madan Mahan Temple) ঐতিহ্যবাসী রাস উৎসব। তাকে ঘিরে সে রাস মেলা। জনশ্রুতি, রাসমন্দিরে রাখা রাসচক্র ঘোরালে নাকি ভাগ্য ফেরে। বংশানুক্রমে সেই রাসচক্র (Rash Chakra) তৈরির দায়িত্ব পালন করে চলেছে আলতাফের পরিবার। কোচবিহারের বাসিন্দা রাসচক্র নির্মাণকারী আলতাফ মিয়া বলেন, "ঠাকুরদা (Grand Father) করেছেন। তারপর বাবা (Father) এখন আমি। ৩৬-৩৭ বছর ধরে আমি রাসচক্র বানাই। নিরামিষ খেয়ে করি। কেউ বলেনি। তবু করি। ভগবানের (God) কাজ। রাস পূর্ণিমার সকালে পৌঁছ দিই।''


করোনা আবহে (Corona Situation) গত বছর রাস মেলা হয়নি। তবে এবার ছাড়পত্র মিলেছে। ধর্ম-বর্ণ, জাতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলের অংশগ্রহণে কোচবিহারের রাস উৎসব হয়ে ওঠে সম্প্রীতির উৎসব। স্বামীকে (Husband) রাসচক্র তৈরিতে সাহায্য করেন স্ত্রী (Wife)। আলতাফ মিয়ার স্ত্রীর বাবলি বিবির কথায় খুব ভালো লাগে। স্বামীকে সাহায্য করি। জানা যায়, ১৮১২ সালে মহারাজ হরেন্দ্রনারায়ণের সময় এই রাস উৎসব ও মেলার সূচনা হয়। সেই ট্রাডিশন এখনও চলেছে। রাস উৎসব ও মেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন লোকজন। ওই জেলার গবেষক নৃপেন পাল বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম সংস্কৃতি জড়িত। কবে শুরু ঠিক জানা যায় না। এখানে ধর্মের বাধা নেই।’’


আরও পড়ুন: Midnapore Medical College and Hospital: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে ডাক্তারি পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার