শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : কোনও জেলা সভাপতি, বিধায়ক, ব্লক সভাপতিরা পঞ্চায়েতের টিকিট দিতে পারবে না। পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে তিনি যে রিপোর্ট পাঠাবেন, তা দেখেই রাজ্য নেতৃত্ব প্রার্থী ঠিক করবে। হুঁশিয়ারি সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়কের। পাশে দাঁড়ালেন জেলা সভাপতিও। যদিও তৃণমূলের কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।


সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া মঞ্চে বক্তব্য রাখার মাঝে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন, 'কোনও জেলা সভাপতি, কোনও ব্লক সভাপতি, কোনও বিধায়ক বা কোনও নেতা পঞ্চায়েতের টিকিট দিতে পারবে না। পঞ্চায়েতের টিকিট রাজ্য পার্টি দেবে। কোনও দাদার কাছে গিয়ে, কারও কাছে গিয়ে লাভ নেই, এলাকায় দলটা করুন।'


দরজায় কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election)। আর এই প্রেক্ষাপটে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এবার দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিলেন, সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। সম্প্রতি কোচবিহারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বদল হয়েছেন। পার্থপ্রতিম রায়কে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিজিৎ দে ভৌমিককে।


জেলা সভাপতির পরপরই, ব্লক স্তরেও রদবদল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিতাইয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে, উপস্থিত ছিলেন জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। সেখানে তিনি দাবি করেন, কোন পঞ্চায়েতে কত কী কাজ হচ্ছে, দল রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে রিপোর্ট দিতে বলেছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ঠিক হবে, কে টিকিট পাবেন? তাঁর হুঁশিয়ারি, 'আমি কিছু কিছু কর্মীকে দেখি, ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার মতো। সিতাই বিধানসভা বাদ দিয়ে, জেলায় গিয়ে জেলা নেতার বাড়ি এবং জেলা সভাপতির বাড়িতে দরবার করে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট... মনে রাখবেন, রাজ্য পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৩ মাসের মধ্যে পঞ্চায়েতের বাস্তব চরিত্র, কোথায় কোন পঞ্চায়েত কতটা কাজ করছে, তার রিপোর্ট আমাকে তৈরি করতে বলেছে।'


কিন্তু, তৃণমূলে কে কার কথা শুনবে? এই প্রশ্ন তুলে বিজেপি খোঁচা দিলেও, তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেছেন, 'উনি যেটা বলেছেন ঠিকই, রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করবেন, কিছু ভুল বলেননি।'


কোচবিহারে জেলা সভাপতি বদলের পাশাপাশি দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহকেও সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী করা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এর পরপরই গত চৌঠা অগাস্ট ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বাসুনিয়া। সেখানে শুধু তিনি লিখেছিলেন...NOW I AM FREE.। (পড়ুন বিস্তারিত- 'আমি মুক্ত!' সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়কের পোস্টে জল্পনা, পদ না পেয়ে ‘পোস্ট’?) কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই, তিনি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, দলের কাছে তাঁরও গুরুত্ব কম নয়। 


আরও পড়ুন- 'আমিও আইনজীবী, যে কোনও কেসে প্রয়োজনে কোর্টে যেতে পারি' : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়