শুভেন্দু ভট্টাচার্য, শীতলকুচি: শুধুই এগিয়েছে সময়। কিন্তু একাধিক মানুষের চিন্তাধারা এখনও বদলায়নি। এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও ফের কুসংস্কারের ঘটনা। এবার ঝাড়ফুঁকের ঘটনা কোচবিহারের শীতলকুচিতে (Coochbehar)। দুর্ঘটনায় প্রায় পঙ্গু হয়ে যাওয়া এক ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হল ওঝা। রীতিমতো শামিয়ানা টাঙিয়ে তিনদিন ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। গতকাল খবর যায় শীতলকুচি (Shitalkuchi) থানা পুলিশের কাছে। এরপর পুলিশ এসে তা বন্ধ করে দেয়। আটক করা হয়েছে এক ওঝাকে।
শীতলকুচি লালবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার বাসিন্দা সামিউল মিঞা। রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন তিনি। মাস খানেক আগে কাজ করতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপর চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু তা চালিয়ে না গিয়েই ওঝার দ্বারস্থ হয় পরিবার। অসম থেকে ৬ জন ওঝাকে আনা হয়। গত শনিবার থেকে ওই ব্যক্তির বাড়ির সামনে ঝাড়ফুঁক শুরু হয়। রীতিমতো শামিয়ানা টাঙিয়ে ঝাড়ফুঁক শুরু করে ওই ৬ ওঝা। গতকাল এই খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির বাড়ির সামনে যায় শীতলকুচি থানার পুলিশ। ওই ৬ ওঝার মধ্যে সামিসুদ্দিন মিঞা এক ওঝাকে গ্রেফতার করেছেন।
আরও খবর: রিপোর্ট এসেছিল পজিটিভ, মৃত্যুর ১৪ মাস পর জানা গেল করোনা আক্রান্ত ছিল না রোগী
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই কুসংস্কারের বলি হতে হয় এক শিশুপুত্রকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা থানার শম্ভুনগর গ্রামের ঘটনা। সাপে কামড়ায় ১১ বছরের এক বালককে। এরপর তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝা-গুনিনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মাঝে মৃত্যু হয় বালকটির। মৃত বালকের নাম দীপ সর্দার। জানা যায়, শম্ভুনগর গ্রামের বাসিন্দা দীপ সরদার মায়ের সঙ্গে বিছানায় শুয়ে ছিল। ভোররাতে হঠাৎ তাকে কিছু একটা কামড়ায় এবং সে তার মাকে সেকথা জানায় বলে দাবি।
এরপরই দীপের মা রবিবার সকালে তাকে স্থানীয় অনন্ত বৈরাগী নামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে মাটি পোড়া থেকে শুরু করে একাধিক প্রকারের ঝাড়ফুঁক করা হয় বলে জানা গেছে। বালককে খাওয়ানো হয় বিভিন্ন গাছ-গাছালির ওষুধও। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে এসমস্ত চলার পর পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন। ওইদিন বিকেলে ফের অসুস্থ বোধ করে দীপ। তখন তাকে পরিবারের সদস্যরা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে ওই বালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আরও খবর: বিশ্বভারতীতে অচলাবস্থা অব্যাহত, লাইব্রেরির গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন পড়ুয়ারা