বালেশ্বর: ওড়িশার বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্য়া। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গোটা ঘটনায় শোকস্তব্ধ সারা দেশ।  এই ঘটনায় একটা তথ্য প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্নের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।


দিলীপ ঘোষ বলেন, 'যারা এই ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক বা চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারত যাচ্ছিলেন বা চিকিৎসা করে ফিরে আসছিলেন।' এই তথ্যের দাবি জানিয়ে দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলবেন আপনি ?' উল্লেখ্য, শুক্রবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়াগামী যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি। বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্য়া। রেল সূত্রে খবর, বাহানগা বাজারের কাছে ৫টি ট্র্যাকে ছিল ৪টি ট্রেন। প্রথম লাইনটি খালি ছিল। দ্বিতীয় লাইনে ছিল একটি মালগাড়ি। তৃতীয় লাইনে চলছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। চতুর্থ লাইনে ছুটছিল হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস আর ৫ নম্বর ট্র্যাকে ছিল দ্বিতীয় মালগাড়িটি।






রেল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে দ্বিতীয় লাইনে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে তৃতীয় লাইনে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের পিছনের কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে চতুর্থ লাইনে আসা হামসফর এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে। তার ফলে হাওড়াগামী ওই ট্রেনের কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। করমণ্ডলের বাকি কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়ে পড়ে পঞ্চম ট্র্যাকে। তার জেরে লাইনচ্যুত হয় ওই ট্র্যাকে থাকা মালগাড়ির ২টি কামরা। 


কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা ? দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কবচের সুবিধা কি ছিল না এই লাইনে ? শনিবার উদ্ধারকাজ শেষে বালেশ্বরের রেলওয়ে মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানালেন, 'উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে, এখন আমরা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করছি। দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রতিরোধকাারী কবচের সুবিধে এই রুটে উপলব্ধ ছিল না '। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই কবচের সুবিধা হাওড়া - দিল্লি ও দিল্লি - মুম্বই লাইনে উপলব্ধ রয়েছে। সব লাইনে এই কবচের সুবিধে নেই। 


গত ২৩ শে মার্চ , রেলমন্ত্রক কবচ নামক দেশীয় স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা (ATP) ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এই পদক্ষেপ বড় দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। দেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথে ধাপে ধাপে ওই ব্যবস্থা চালু  করা হবে। কবচ পরিষেবা থাকলে দুটি ট্রেনের মুখোমুখ সংঘর্ষ যেমন এড়ানো সম্ভব, তেমন পিছন থেকে ধাক্কা লাগলে, তাও সামলে দেওয়া সম্ভব। Signal Passing At Danger (SPAD) এড়াতে সাহায্য করতে পারে এই ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশার সময় দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করবে এই বন্দোবস্ত। ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ও আপৎকালীন ব্রেক কষতেও সাহায্য করে কবচ পরিষেবা। কিন্তু এই রুটে এই পরিষেবা চালুই হয়নি। 


আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?


আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?


কয়েক মাস আগে প্রসঙ্গক্রমে রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কবচ সুবিধে লাগু করার জন্য রেলপথের আধুনিকীকরণ হচ্ছে। কিন্তু রেলওয়ে মুখপাত্রর থেকে জানা গেল, করমন্ডল এক্সপ্রেস যে রুটে ছোটে, সেখানে কবচের ব্যবস্থা নেই। এখন কবচ থাকলে কতটা সুবিধে হত দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে, সেই প্রশ্নই উঠছে মানুষের মনে।