গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার (Coromandel Express Accident) পর কেটে গিয়েছে চার দিন। কিন্তু এখনও কোন খোঁজ নেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুই যাত্রী গিয়াসউদ্দিন সেখ ও সামসুল হুদার। দু’জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই গ্রামের দুই যুবক ওড়িশা পৌঁছেছেন।সেখানকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজ করছেন। কিন্তু আজ সকাল পর্যন্ত দু’জনের কোনও খোঁজ মেলেনি। তবে ইতিমধ্যে গ্রামের তিনজন আব্দুল মজিদ সেখ, মিরাজ সেখ ও আসমাউল সেখের মৃত্যু সংবাদ পৌঁছেছে। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উৎকন্ঠা বাড়ছে দুই পরিবারের সদস্যদের। সেখ গিয়াসউদ্দিন প্রতিবেশীদের সঙ্গে এই প্রথম রাজমিস্ত্রির যোগাড়ের কাজ করতে কেরল যাচ্ছিলেন। একটি বাড়ি তৈরির টাকা উপার্জনের জন্য তিনি দক্ষিণ ভারতে যাচ্ছিলেন। সেই অসামাপ্ত ঘর পড়ে আছে।
বাড়িতে স্ত্রী ও এক ছোট ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ফেরার আশায় প্রতিক্ষায় গিয়াসউদ্দিনের স্ত্রী। একই ছবি প্রতিবেশী সামসুল হুদার পরিবারেও। তাঁরও কোনও খোঁজ মেলেনি। আগেও তিনি ভিন রাজ্যে গিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মায়ের সঙ্গে টেলিফোনে শেষ কথা হয়েছিল সামসুলের। বাড়িতে স্ত্রী, তিন সন্তান, বৃদ্ধা মা আছেন। বাড়ির রোজগেরে সদস্য ফিরবেন এই আশায় পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা।
অপরদিকে, কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা ? দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কবচের সুবিধা কি ছিল না এই লাইনে ? গত শনিবার উদ্ধারকাজ শেষে বালেশ্বরের রেলওয়ে মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছিলেন, 'উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে, এখন আমরা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করছি। দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রতিরোধকাারী কবচের সুবিধে এই রুটে উপলব্ধ ছিল না '। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই কবচের সুবিধা হাওড়া - দিল্লি ও দিল্লি - মুম্বই লাইনে উপলব্ধ রয়েছে। সব লাইনে এই কবচের সুবিধে নেই।
আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
বালেশ্বরে রেল বিপর্যয়, মামলা রুজু করল সিবিআই। বিপর্যয়ের দিন সকালে কারা ডিউটিতে ছিলেন, কারা ছিলেন বিকেলে? সূত্রের খবর, ঘটনার দিন উপস্থিত রেলকর্মীদের তালিকা তৈরি করল সিবিআই।কারা ওইদিন ছুটিতে ছিলেন, সে নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআই। দুর্ঘটনার আগে সিগন্যাল রুমে কী হচ্ছিল, কারা ছিলেন প্যানেল কন্ট্রোল রুমে? কে প্যানেল কন্ট্রোল রুমে পয়েন্ট চেঞ্জ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন? প্রশ্ন সিবিআইয়ের। সিগন্যাল সবুজ থাকা সত্ত্বেও লুপ লাইনে কেন ট্রেন? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই। ষড়যন্ত্র, না নাশকতা, দুর্ঘটনার পিছনে কারণ জানতে তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ১০ সদস্যের সিবিআই টিম এর আগেই পৌঁছয় বালেশ্বরে। টিমের নেতৃত্বে আছেন সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর বিপ্লব চৌধুরী।