বালেশ্বর: শুক্রবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়াগামী যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি (Coromandel express Accident )। বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্য়া। এই ঘটনায় সোশ্যাল পোস্ট করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, 'করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার বিষয়ে আপনার ইতিমধ্যেই অবগত আছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপির সৈনিক হিসেবে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ করতে সক্ষম হয়েছি ইতিমধ্য়ে।..আমাদের ছেলেরা অনবরত পরিষেবা দিচ্ছে।' পাশাপাশি জন পরিষেবার জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পের জরুরী ফোন নাম্বারও শেয়ার করেছেন তিনি।
রেল সূত্রে খবর, বাহানগা বাজারের কাছে ৫টি ট্র্যাকে ছিল ৪টি ট্রেন। প্রথম লাইনটি খালি ছিল। দ্বিতীয় লাইনে ছিল একটি মালগাড়ি। তৃতীয় লাইনে চলছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। চতুর্থ লাইনে ছুটছিল হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস আর ৫ নম্বর ট্র্যাকে ছিল দ্বিতীয় মালগাড়িটি।রেল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে দ্বিতীয় লাইনে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে তৃতীয় লাইনে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের পিছনের কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে চতুর্থ লাইনে আসা হামসফর এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে। তার ফলে হাওড়াগামী ওই ট্রেনের কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। করমণ্ডলের বাকি কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়ে পড়ে পঞ্চম ট্র্যাকে। তার জেরে লাইনচ্যুত হয় ওই ট্র্যাকে থাকা মালগাড়ির ২টি কামরা।
কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা ? দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কবচের সুবিধা কি ছিল না এই লাইনে ? শনিবার উদ্ধারকাজ শেষে বালেশ্বরের রেলওয়ে মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানালেন, 'উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে, এখন আমরা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করছি। দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রতিরোধকাারী কবচের সুবিধে এই রুটে উপলব্ধ ছিল না '। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই কবচের সুবিধা হাওড়া - দিল্লি ও দিল্লি - মুম্বই লাইনে উপলব্ধ রয়েছে। সব লাইনে এই কবচের সুবিধে নেই।
গত ২৩ শে মার্চ , রেলমন্ত্রক কবচ নামক দেশীয় স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা (ATP) ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এই পদক্ষেপ বড় দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। দেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথে ধাপে ধাপে ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে। কবচ পরিষেবা থাকলে দুটি ট্রেনের মুখোমুখ সংঘর্ষ যেমন এড়ানো সম্ভব, তেমন পিছন থেকে ধাক্কা লাগলে, তাও সামলে দেওয়া সম্ভব। Signal Passing At Danger (SPAD) এড়াতে সাহায্য করতে পারে এই ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশার সময় দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করবে এই বন্দোবস্ত। ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ও আপৎকালীন ব্রেক কষতেও সাহায্য করে কবচ পরিষেবা। কিন্তু এই রুটে এই পরিষেবা চালুই হয়নি।
আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
কয়েক মাস আগে প্রসঙ্গক্রমে রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কবচ সুবিধে লাগু করার জন্য রেলপথের আধুনিকীকরণ হচ্ছে। কিন্তু রেলওয়ে মুখপাত্রর থেকে জানা গেল, করমন্ডল এক্সপ্রেস যে রুটে ছোটে, সেখানে কবচের ব্যবস্থা নেই। এখন কবচ থাকলে কতটা সুবিধে হত দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে, সেই প্রশ্নই উঠছে মানুষের মনে।