কলকাতা: "যাঁরা সুস্থভাবে রাজনীতি করেন বুদ্ধদার চলে যাওয়াটা তাঁদের কাছে বড় ক্ষতি।" বৃহস্পতিবার এই মন্তব্যই করলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Ashok Bhattacharyya) ঘনিষ্ঠ ও রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভটাচার্য (CPI(M) leader Ashok Bhattacharyya)।


আরও পড়ুন: Buddhadeb Bhattacharjee Demise: একতলার স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে ঠাসা বই আর ছবি, কেমন ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এক চিলতে বাড়ি?


এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বুদ্ধদা অনেক বার অসুস্থ হয়েছেন আবার সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে এসেছেন। কিন্তু, এবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তিনি আর বাড়ি ফিরে এসেননি। এবার আর চিকিৎসার কোন সুযোগই দেননি তিনি। যাঁরা সুস্থ রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন বুদ্ধদার চলে যাওয়াটা তাঁদের কাছে বিরাট ক্ষতির। শুধু এটা সিপিএমের ক্ষতি নয়।"




শিলিগুড়িকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কতটা গুরুত্ব দিতেন? এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, "শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও উত্তরবঙ্গের সমস্যার সঙ্গে বুদ্ধদা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলেন। একসময় দার্জিলিঙের ইনচার্জও ছিলেন তিনি। ওনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। যতবার আমি শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা যেতাম ততবার আমাকে এখন থেকে কমলালেবু ও বরোলি মাছ নিয়ে যেতে বলতেন। কিন্তু এবারই আমি কমলালেবু নিয়ে যেতে পারেনি।" 


আরও পড়ুন: Buddhadeb Bhattacharjee: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল, স্মৃতিচারণ বিরোধীদের


পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা করে তিনি আরও বলেন, "আমি যখন প্রথম মন্ত্রী হই তখন দফতরের কাজ আমাকে হাতে ধরে শিখিয়ে দিয়েছিলেন বুদ্ধদা। ফাইল কীভাবে লিখতে হয় তা ছোট ভাইয়ের মতো দেখিয়ে দিতেন। মুখ্যমন্ত্রীর মতো অত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ফাইল লিখতে হয় তা নিজের ছোট ভাইয়ের মতো শিখিয়ে দিতেন। এমনতি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামাল দেওয়ার সময় খুবই সাধারণভাবে জীবন যাপন করতেন তিনি। শিলিগুড়িতে কোনও কাজ থাকলে আমার বাড়িতে এসেই উঠতেন। আমার প্রয়াত স্ত্রী শুক্লা ভট্টাচার্যকে নিজের বোনের মতো দেখতেন আর এখানে এলে তাঁর হাতে রান্না করা খবর খেতেন। আমাদের বাড়িতে যখন আসতেন তখন একটি ব্যাগে করে মাত্র একটা পাঞ্জাবিই আনতেন। তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য আজকেরই এই পশ্চিমবঙ্গ তাঁকে ছাড়া ভাবাই যায় না। আজকে তাঁর মৃত্যু শুধু সিপিএম দলের জন্য ক্ষতি নয়। সারা রাজ্য তথা দেশের সৎ রাজনীতিবিদদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও ক্ষতির দিন। আজকে সকালে উঠে বুদ্ধবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি অত্যন্ত শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। এমন খবর যে পাব তা আশাই করতে পারেনি।" 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।