উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: 'ইন্ডিয়া' (I.N.D.I.A.) জোটের সমন্বয় কমিটিতে সিপিএমের (CPM) কোনও প্রতিনিধি থাকবে না, ২ দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠকে (Politburo Meeting) এমনই সিদ্ধান্ত নিল দল। স্থির হয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলনে থাকলেও কোনও কমিটির সঙ্গে থাকবে না সিপিএম। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে এবং রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জোরাল হবে। পলিটব্যুরোর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, বঙ্গ সিপিএমের দাবিতেই সিলমোহর দিল পলিটব্যুরোর।
কী অবস্থান হতে চলেছে সিপিএমের?
এই সিদ্ধান্তের নেপথ্য়ে পলিটব্যুরো নেতাদের মতামত স্পষ্ট। তাঁদের মতে, এই বিজেপি-বিরোধী I.N.D.I.A. জোট তৈরির ক্ষেত্রে বামেদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এই জোটে কারা থাকবে, শেষ পর্যন্ত কত জনকে জোটে দেখা যাবে এই নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন রয়েছে। প্রসঙ্গত, পলিটব্যুরোর বৈঠকের আগে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। কারণ এই জোট যে প্রয়োজন, সেটা সব সদস্যই মেনেছেন। কিন্তু এই জোটে থেকেও কী ভাবে তৃণমূলের থেকে একটা দূরত্ব রাখা যায়, সেই ভাবনা থেকেই সমন্বয় কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে সার্বিক প্রেক্ষাপটের কথা ভেবে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বলা বাহুল্য সেই বৈঠকেও বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়নি। কারণ সিপিএম নেতারা মনে করেন, এই জোটের ফলে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলি এক ছাতার তলায় আসছে। এবং এক্ষেত্রে কোনও 'ছুঁৎমার্গ' রাখতে চান না তাঁরা। কিন্তু পাশাপাশি, যে জোটে তৃণমূল রয়েছে সেই জোটে সিপিএমের থাকার ভুল ব্যাখ্যাও হতে পারে। বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের ফলাফল যখন কিছুটা ভাল হয়েছে, তখন বিজেপির তরফে I.N.D.I.A. জোটের উদাহরণ তুলে ধরে এই প্রচার চালানো হতে পারে যে তৃণমূল ও সিপিএম একই বন্ধনীভুক্ত, ধারণা রাজ্য় কমিটির নেতাদের। মানুষ যাতে এই ভুল বোঝানোয় কর্ণপাত না করেন, সেই জন্যই কোনও সমন্বয় কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্য়মে দুটি উদ্দেশ্যপূরণের চেষ্টা করলেন সিপিএম নেতারা। এক, জোটে থেকেও তৃণমূলের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা। দুই, দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে এবং রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরাল করা।
কী বলছে রাজ্য সিপিএম নেতা?
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বললেন, 'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে, ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বসে আছে, টাকাপাচার ও অন্যান্য নানা বিষয়ে যাঁরা যুক্ত তাঁদের সঙ্গে আমরা শেয়ার করব, এটা যাঁরা ভাবছেন তাঁরা ভাবতে পারেন, কিন্তু এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। নতুন কথা কী আছে?' কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটা গ্রহণযোগ্য হবে? বলবে সময়।
আরও পড়ুন:রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৯, প্রশাসন ব্যর্থ বলে তোপ শুভেন্দুর