মোহন প্রসাদ, মলয় চক্রবর্তী ও বাচ্চু দাস, দার্জিলিং: রাজৌরিতে নিহত জওয়ান সিদ্ধান্ত ছেত্রীর মৃতদেহ নিয়ে আসা হল বাগডোগরায়। সেখানে সেনাবাহিনীর তরফে তাঁকে সম্মান জানানো হয়। এরপর তাঁর দেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন সেনা জওয়ানরা। দার্জিলিঙের বিজনবাড়িতে সিদ্ধান্তের বাড়িতে শোকের ছায়া।


ফিরল কফিনবন্দি দেহ: মার্চ মাসেই বিয়ে হয়েছিল, ২ মাস কাটতে না কাটতেই স্বামীহারা হলেন প্রজ্ঞা গুরুঙ্গ। জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গিদমন অভিযানে গিয়ে মৃত্যু হল সিদ্ধান্ত ছেত্রীর। শুক্রবার রাজৌরিতে জঙ্গিদমন অভিযানে ৫ সেনার মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দার্জিলিঙের বিজনবাড়ির বাসিন্দা বছর ২৫-এর সিদ্ধান্তও।

২০১৯ সালে চাকরি যোগ দেন তিনি। ৯ প্যারা স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো ছিলেন সিদ্ধান্ত। পরিবার সূত্রে খবর, মার্চ মাসে বিয়ে করতে বাড়িতে ফিরেছিলেন। এরপর দশেরার সময় বাড়ি ফিরবেন বলে কথা দিয়ে ৮ এপ্রিল কাজে যোগ দিতে রওনা দিয়েছিলেন। একমাসের মধ্যেই ফিরলেন সিদ্ধান্ত।কিন্তু কফিন বন্দি হয়ে। শনিবার দুপুরে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় তাঁর নিথর দেহ। নিহত জওয়ানের আত্মীয় বিক্রম থাপা বলেন, “ছোটো থেকে আর্মি যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। ভাল পোস্টে ছিল। দেড় মাস আগে বাড়ি এসেছিল। বিয়ে করতে।’’

ট্যুইটে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমত বন্দ্যোপাধ্যায়। নিহত জওয়ানের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাংডুবি সেনা ছাউনিতে। সেখানে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানানো হয়।  পরিবার সূত্রে খবর, সোমবার শেষবার স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় সিদ্ধান্তের। ফোনে বলেছিলেন, স্পেশাল অপারেশনে যাচ্ছি। সাতদিন পর ফিরে ফোন করব। অতিকষ্টে কুলির কাজ করে ছেলেকে বড় করেছিলেন মা। ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসার পর থেকেই বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তিনি। রবিবার হবে শেষকৃত্য।


প্রসঙ্গত, গতকাল সূত্র মারফত জানা যায়, রাজৌরির কান্দি এলাকায় জঙ্গি আনাগোনা রয়েছে। সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল সকালে টোটা গালি এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি ট্রাকে হামলার ঘটনায় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। জঙ্গিদের খোঁজে সেনার একটি দল গুহায় প্রবেশ করে। সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিরা বিস্ফোরক ছুড়ে মারে। শুরু হয় দুপক্ষের গুলির লড়াই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই সেনার। বাকিদের গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, আহত তিন সেনার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। 


আরও পড়ুন: WHO on Covid-19: কোভিড আর 'বিপদ' নয়? বড়সড় ঘোষণা WHO-এর