কলকাতা: দীপাবলিতে (Diwali 2023) সকাল থেকেই ভক্তদের ভিড় মন্দিরে মন্দিরে । কলকাতার অধিকাংশ মন্দিরগুলিতেই পরিবারের মঙ্গলকামনায় পুজো দিচ্ছেন মায়েরা। সেজে উঠেছে ফিরিঙ্গি কালীবাড়িও। চলছে শক্তির আরাধনা।


অ্যান্টনি কবিয়াল। তাঁর নামেই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের বিখ্যাত কালী মন্দির, ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি। এই মন্দির ঘিরেও নানা কিংবদন্তী। কথিত আছে, মামার বাড়িতে এলে একচালার মন্দিরে গিয়ে মাকে গান শোনাতেন অ্যান্টনি কবিয়াল। মহামায়ার স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজে হাতে গড়েন মা সিদ্ধেশ্বরীকে। সেই থেকে ঐতিহ্য মেনে ফিরিঙ্গি কালীবাড়িতে পূজিত হন মা। যদিও মন্দির কর্তৃপক্ষের মতে, বাঙালি মেয়েকে বিয়ে করার পর অ্যান্টনি হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন। সেইসময় এখানে শিবের উপাসনা হত। সেখানেই মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যান্টনি কবিয়াল। 


প্রসঙ্গত, আজ বেলা পর্যন্ত থাকছে অমাবস্যা। কলকাতা থেকে জেলা, বিভিন্ন জায়গায় চলছে কালীপুজো। ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। মাতৃসাধক শঙ্কর ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দির। ১৭০৩ সালে এই মন্দিরে পুজো শুরু হয়। জনশ্রুতি, ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে আসতেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস। প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয় ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে। এখানে দেবীমূর্তি জাগ্রত বলে মনে করেন ভক্তরা। তাই সিদ্ধেশ্বরী কালী মাকে দর্শন করতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরে।


কালীঘাটে আবার মহালক্ষ্মী রূপে শ্যামা মায়ের আরাধনা হয়। কালীপুজোর দিন এখানে লক্ষ্মীপুজো হয়। একান্ন পীঠের অন্যতম কালীঘাট। কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এখানে। অন্যতম প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত কালীঘাট। কালীপুজোর দিন সকাল থেকেই কালীঘাট মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে পুজো দিতে এসেছেন পুণ্যার্থীরা। আজ গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে মন্দির। পুজো উপলক্ষ্যে কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ। 


আরও পড়ুন, জয়নগরে তৃণমূল নেতাকে গুলি করে 'খুন'


অপরদিকে,  সংস্কারের পাশাপাশি করা হচ্ছে কালীঘাট মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে প্রথম পর্যায়ের সংস্কারের কাজ। পুণ্য পুকুরকে জুড়ে নেওয়া হয়েছে মূল মন্দিরের সঙ্গে। আমূল বদলে যাচ্ছে কালীঘাট মন্দির (Kalighat Temple)। কালীপুজোর আগে কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। পুণ্য পুকুরকে মন্দিরের সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হয়েছে। পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখতে অনেক কিছু করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এই পর্যায়ে সংলগ্ন কুণ্ড বা পুণ্য পুকুরকে মন্দিরের সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাকে ঘিরে করা হয়েছে অপূর্ব সৌন্দর্যায়ন। পুকুরের চারপাশ সাজিয়ে তোলা হয়েছে পোড়া মাটির কারুকাজে। একাধিক মূর্তি বসানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, পুকুরের ঘাটটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। জল পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য বিশেষ ফোয়ারা এবং ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো হচ্ছে।