কলকাতা: গুগল দেখাচ্ছে কলকাতা (Kolkata) থেকে জার্মানির মিউনিখ (Munich) শহরের দূরত্ব কমবেশি ৭২০০ কিলোমিটার। এত দূরে থাকা এই দুটি শহরকে এক সুতোয় গেঁথেছে দুর্গাপুজো (Durga Puja), সৌজন্যে মিউনিখের প্রবাসী বাঙালি সংগঠন। বোধনের আগেই বাংলা এখন শারোদৎসবে নিমজ্জিত। ঠিক তখনই মিউনিখেও জোরকদমে চলছে তুমুল প্রস্তুতি।
শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। মিউনিখে বসবাসকারী ৬ জন প্রবাসী বাঙালি মিলে তৈরি করেন একটি সংগঠন- সম্প্রীতি মিউনিখ। শুধু বাঙালিই নয়, বিবাহসূত্রে আবদ্ধ ২ জন জার্মানও ছিলেন ওই সংগঠনে। সেই সংগঠনই দুর্গাপুজোয় আয়োজক। এখন এর সদস্য সংখ্যা আড়াইশো ছুঁইছুঁই।
অনেকে বলে থাকেন বাঙালি বাংলা থেকে দূরে থাকতে পারেন, কিন্তু বাঙালিয়ানা থেকে নয়। জার্মান মুলুকে বাঙালিয়ানার স্বাদ পেতে এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে লালন করতেই এই সংগঠনের জন্ম। ২০১৪ সালে তৈরি সম্প্রীতি মিউনিখ শুরু থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। পয়লা বৈশাখের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন দিয়ে কাজ শুরু এই সংগঠনের। বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজনও হয়েছে। তবুও অভাব ছিলই, সেই অভাবই পূরণ করেছে দুর্গাপুজো। ২০১৯ সাল থেকে দুর্গাপুজো শুরু করেছে সম্প্রীতি মিউনিখ। তারপর থেকে প্রতি বছরই মিউনিখে শোনা যায় ঢাকের আওয়াজ।
কুমোরটুলি থেকে এই পুজোয় দেবী প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতেই হয় পুজো। দেবীর পুজো করতে বাংলা থেকেই যান এক পুরোহিত। নৈহাটি থেকে যাচ্ছেন ওই পুরোহিত। তিনিই পুজোর যাবতীয় কাজ করবেন। পঞ্জিকা মেনে, তিথি-নক্ষত্র মেনে দেবী পূজিতা হবেন মিউনিখেও।
২০১৯ সালে পুজো শুরু হয়েই তারপরের বছর হোঁচট খেয়েছিল কোভিডের কারণে। ২০২১ সালেও কোভিড থাবা, সেই কারণে শুধুমাত্র সদস্যরাই উপস্থিত ছিলেন পুজোয়। ২০২২-এও নানা নিয়মের বেড়াজাল ছিল। তাই হাতে গোনা কয়েকজনই থাকতে পেরেছেন পুজোতে। তাই এবার ঢালাও উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মিউনিখের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুবিশাল ঐতিহ্যশালী সভাগৃহ 'ফ্রাইহাইট্সহালে'-এ আয়োজিত হচ্ছে দুর্গাপুজো। থাকছে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। চার দিনই সন্ধেয় সংগঠনের সদস্যরা গান-নাচ-নাটকের জমজমাট আয়োজন করছেন। শুধু বাঙালিই নয়, বাকি প্রবাসী ভারতীয়রাও যাতে সেই উৎসবে অংশ নিতে পারেন তার জন্যও নানা ব্যবস্থা থাকছে। সপ্তমীর সন্ধ্যায় থাকছে ডান্ডিয়া অনুষ্ঠান। ২০২৩-এর 'শারদ সম্প্রীতি'তে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকছেন মিউনিখের ভারতীয় দূতাবাসের প্রধান আধিকারিক শ্রী মোহিত যাদব, নগর পরিষদের অধিকারিক শ্রী টমাস লেখনর।
আরও পড়ুন: তিনি দাঁড়ালেই সেলফির লাইন! পঞ্চমী-আড্ডায় মদনের মুখে বচ্চনের সংলাপ