পুণে: একটা সময় উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে একের পর এক অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিতেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল সুপারম্যান ঋদ্ধিম্যান।


বৃহস্পতিবার পুণেতে যেন ঋদ্ধিমান সাহাকে মনে পড়ালেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। একটা সময় যিনি কর্নাটকের কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়ের মতোই শুধু ব্যাটিংই করতেন। সৌরভের টিম ইন্ডিয়ায় ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে জায়গা পাকা করার জন্য উইকেটকিপিং শুরু করেন। তারপর দ্রাবিড় হয়ে ওঠেন জাতীয় দলের উইকেটকিপার-ব্যাটার।


কে এল রাহুলও কর্নাটকের হয়ে শুধু ব্যাটিংই করতেন। কখনও সখনও কিপিং করেছেন। তবে ভারতের ওয়ান ডে দলে নিজের জায়গা পাকা করেছেন উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসাবে। ঋষভ পন্থের গাড়ি দুর্ঘটনা জাতীয় ওয়ান ডে দলে তাঁর জায়গা আরও পোক্ত করে। সেই রাহুল পুণেতে বাংলাদেশ ম্যাচে এমন একটা ক্যাচ ধরলেন, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। বলা হতে থাকে, রাহুল কি মানুষ? নাকি উড়োজাহাজ?


ঘটনাটি বাংলাদেশ ইনিংসের ২৫তম ওভারের। মহম্মদ সিরাজ়ের ওভারের প্রথম বলটি লেগস্টাম্প লাইনে ছিল। ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ়। বল তাঁর ব্যাটে লেগে লেগ স্লিপের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন যে, বল বাউন্ডারি লাইনে আছড়ে পড়বে। কিন্তু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন রাহুল।


অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় শরীর বাঁদিকে শূন্যে ভাসিয়ে বল তালুবন্দি করেন তিনি। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ক্যাচের ভিডিও। অনেকেই লেখেন, এবার রাহুলও সুপারম্যান। কেউ কেউ লেখেন, বাজপাখির মতো ক্ষিপ্রতা দেখিয়েছেন রাহুল। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা এতটাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যান যে, রাহুলকে জড়িয়ে ধরে সেলিব্রেশন শুরু করেন।


 






দীর্ঘ ২৪ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের (IND vs BAN) দুই ওপেনার। তানজিদ হাসান ও লিটন দাস মিলে ততক্ষণে ১৪.৪ ওভারে তুলে ফেলেছেন ৯৩ রান। যা ১৯৯৯ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপে (ODI World Cup) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ৬৯ রানের ওপেনিং জুটির রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেল। টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষ শিবিরে কাঁপুনি ধরানো ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে তখন সাদামাটা দেখাচ্ছিল। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো হার্দিক পাণ্ড্যর চোট পেয়ে মাঠের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া।


ভারতকে ম্যাচে ফেরালেন সেই বোলাররাই। বিশেষ করে দুই স্পিনার রবীন্দ্র জাডেজা ও কুলদীপ যাদব। ১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন জাডেজা। কুলদীপ ১০ ওভারে ৪৭ রান খরচ করে নিলেন এক উইকেট। তানজিদ হাসানকে (৫১ রান) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ফেরান চায়নাম্যান স্পিনার। লিটন দাসকে (৬৬ রান) ফিরিয়ে দেন সৌরাষ্ট্রের বাঁহাতি স্পিনার জাডেজা। শাকিব আল হাসানের পরিবর্তে এই ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া নাজমুল হোসেন শান্তকেও ফেরান জাডেজা। মেহেদি হাসান মিরাজ়কে ফিরিয়ে দেন মহম্মদ সিরাজ়। একটা সময়ে বিনা উইকেটে ৯৩ থেকে ১৩৭/৪ হয়ে যায় বাংলাদেশ।


যখন মনে হচ্ছে যে, ভারতীয় বোলাররা মারণকামড় দিতে চলেছেন, তখনই ব্যাট হাতে ক্রিজে জমে যান শাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার, বহু যুদ্ধের সৈনিক মুশফিকুর রহিম ও মাহমাদুল্লাহ। যশপ্রীত বুমরার বলে মুশফিকুরের ক্যাচ যখন অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে লুফলেন জাডেজা, ততক্ষণে মূল্যবান ৩৮ রান করে ফেলেছেন বাংলাদেশের উইকেটকিপার। মাহমাদুল্লাহকেও ফেরান বুমরাই। তাঁর নিখুঁত ইয়র্কারের জবাব ছিল না মাহমাদুল্লাহর কাছে। তবে ৩৬ বলে ৪৬ রান করেন মাহমাদুল্লাহ। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ২৫৬/৮।


আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে এখনও লম্বা পথ যেতে হবে রোহিতদের, সালকিয়ায় পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে বললেন সৌরভ


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial