রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িবাসীর (Jalpaiguri) অহঙ্কার যেন এই পুজো (Durga Puja 2023)। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) অন্যতম প্রাচীন বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মাতৃ আরাধনা এবার পড়ল ৫১৩ বছরে। কনক দুর্গার রূপ দেখতে প্রতিদিন রাজবাড়িতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ।


বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মাতৃ আরাধনা: তপ্ত কাঞ্চন বর্ণা, রাজকীয় সাজ, খোলা চুল। টানা টানা চোখে মমতাময়ী মা। পাঁচ শতাব্দী প্রাচীন জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির কনক দুর্গার রূপ দেখতে এরাজ্যের পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকেও আসেন অনেকে। শোনা যায়, ৫১৩ বছর আগে অসমের ঠুটাঘাট পরগনায় মাটির ঢেলা দিয়ে পুজোর সূচনা করেছিলেন রাজপরিবারের দুই সদস্য শিষ্য সিংহ ও বিশ্ব সিংহ। কথিত আছে, দেবী দুর্গার আশীর্বাদে সেই বছরই কোচবিহারের রাজা হন বিশ্ব সিংহ, আর জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুরে এসে রাজত্ব শুরু করেন শিষ্য সিংহ।                                


এখন যেখানে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল সেখানেই নাকি ছিল প্রথম রাজার বাড়ি। পরে, বংশানুক্রমিকভাবে একটি পুজো চলে আসে কোচবিহার রাজবাড়িতে, আরেকটি পুজো জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে। এখন আর ওড়ানো হয় না নীলকণ্ঠ পাখি। প্রতীকী বলি হিসাবে দেওয়া হয় চাল কুমড়ো বলি। পুজোর কটা দিন ঘরের মেয়ে উমার আপ্যায়নে ব্য়স্ত থাকেন রাজপরিবারের সদস্যরা। আর রাজবাড়ির এই পুজো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিন আসেন পুণ্যার্থীরা। নবমীতে দিনভর বিশেষ পুজোর ব্য়স্ততার মধ্য়েও যেন ভেসে আসে বিষাদের সুর। দশমীতে চোখের জলে বিদায় দিতে হবে দেবীকে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি শূন্যে গুলি ছুড়ে মনে মনে বলা 'আবার এসো মা'।                             


অন্যদিকে, বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের বড় বাড়ির পুজোর বয়স ৩০৭ বছর। কৃষ্ণদেব রায়চৌধুরীর হাত ধরে ১৭১৭ সালে এই পুজো শুরু হয়। এখানে পুজো হয় বিদ্যাপতি রচিত দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী মতে। এই মতে, অষ্টমী ও নবমীতে অপদেবতা ও উপদেবতাদের উদ্দেশে ‘মাসভক্তবলি’ পুজো হয়। মাসকলাই ঘি দিয়ে মেখে ১৮০টি খুড়িতে সাজিয়ে দেওয়া হয় নৈবেদ্য। নবমীর দিন কুমারী পুজো হয় সার্বণ রায়চৌধুরীদের বড় বাড়িতে। এদিন চালকুমড়ো ও আখ বলি দেওয়ারও প্রথা রয়েছে। 


আরও পড়ুন:  Malda News: মিনিবাসের সঙ্গে বাইকের সংঘর্ষ, মালদায় মৃত্যু দুই ভাইয়ের