জলপাইগুড়ি: দশমীর সকালে উৎসবমুখর জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ি।প্রথা মেনে এদিন মা-কে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, পুঁটি মাছ, কচুর শাক, দই, মিষ্টি। এরপর শুরু সিঁদুরখেলা। ঢাকের তালে নাচে পা মেলান শহরবাসী।


স্থগিত রাখা হয়েছে প্রতিমাকে গান স্যালুট


এ বছর স্থগিত রাখা হয়েছে প্রতিমাকে গান স্যালুট দেওয়ার প্রথা। এরপর প্রতিমাকে চাকা লাগানো পাটাতনে করে নিয়ে যাওয়া হবে রাজবাড়ির পুকুরে। রীতি মেনে নিরঞ্জনের সময় রাজ পরিবারের কোনও সদস্য উপস্থিত থাকেন না। শুধুমাত্র রাজ পরিবারের পুরোহিত এবং শহরবাসীরা বিসর্জনে অংশ নেন। এরপর রাজবাড়ির তরফে মিষ্টিমুখ করানো হয়।


রশিতে টেনে ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা


প্রসঙ্গত, ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো কোচবিহার শহরে দেবীবাড়ির পুজো। মা দুর্গা এখানে বড়দেবী বলে পূজিতা। দশমীর সকালে দেবী বরণের পর শুরু হয় সিঁদুরখেলা। রাজা নরনারায়ণের হাতে শুরু হওয়া এই পুজোর বিসর্জনের রীতি আজও একই রয়েছে। রশিতে টেনে ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। মূল কাঠামো অক্ষত রেখে দেবীর দুটি হাত, পায়ের পাতা, অসুর, বাঘ, সিংহকে খণ্ডিত করে যমুনা দিঘির জলে বিসর্জন দেওয়া হয়।


বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু


অপরদিকে, ২৬৭ বছরের শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। সাবেকিয়ানা আর বনেদিয়ানার মেলবন্ধনের এই পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে।  সকালেই পুজোর পর হয়েছে দর্পণে বিসর্জন। এরপর প্রতিমাকে বরণ করে, কনকাঞ্জলি দিয়ে বিদায় জানানো হয়েছে মহামায়াকে। শোলা দিয়ে তৈরি নীলকণ্ঠ পাখিকে বেলুনে বেঁধে ওড়ানো হবে গঙ্গার ঘাটে। বাহকের কাঁধে চাপিয়ে, শোভাবাজার রাজবাড়ি থেকে শোভাযাত্রা করে বাগবাজার ঘাটে গিয়ে গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।


আরও পড়ুন, কেউ সাজলেন দুর্গা, কেউ কার্তিক, দশমীতে অভিনব প্রতিবাদ চাকরি প্রার্থীদের


হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা


আজ বিচ্ছেদের দশমী। বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা। ছেলেমেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে পাড়ি দেবেন উমা। আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর। সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী-বরণের প্রস্তুতি। সকালে হবে ঘট বিসর্জন। এরপর সিঁদুরখেলা। তারপর গঙ্গার ঘাটে মা-কে বিদায় জানানোর পালা। কোলাকুলিতে হবে শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ। হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা। বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা।