সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেফতার অন্যতম অভিযুক্ত। ধৃতের নাম রমজান আলি। তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল বারাসাত আদালত। এই নিয়ে দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২। 


ভয়াবহ বিস্ফোরণ আর তার জেরে ৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্য়ু। ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া মৃতদেহ। ২৭ অগাস্ট সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল। বিস্ফোরণের বীভৎসতা দেখে আঁতকে উঠেছিল গোটা রাজ্য। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে টালির চাল, পাশের বাড়ির বাড়ির বারান্দায় পর্যন্ত ছিটকে গিয়ে পড়েছিল দেহাংশ। 


কিন্তু, বিস্ফোরণে কাদের হাত? কাদের মদতে দিনের পর দিন চলছিল বিস্ফোরকের ল্য়াবরেটরি? সেই প্রশ্নগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে তৃণমূল এবং ISF দুই দলের নামই। পুলিশ সুপারের মুখে উঠে এসেছিল আইএসএফের রমজান আলির নাম। বারাসাত পুলিশ জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায় বলেন, 'এফআইআর চারজনের বিরুদ্ধে। একজন গ্রেফতার। একজন রমজান আলি। বুথ লেভেল লিডার। তার নামও আছে। পলাতক আছে। বাইরে থেকে জানতে পেরেছি, অন্য় জেলা থেকে কাজ করতে আসত। ওর বাড়িতে থাকত। সে পলাতক।'


বিস্ফোরণের ঘটনার ১ মাস পর, এবার, সেই রমজান আলিকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতের আইনজীবী সাইদুর জামান বলেন, '১৪ দিনের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। ১০ দিনের হেফাজত দিয়েছে।' আইএসএফ-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, 'চুনোপুটিদের গ্রেফতার করে আসল তথ্য পাওয়া যাবে না। আমরা এনআইএ তদন্ত দাবি করছি। তাহলেই জলকে জল, দুধকে দুধ পরিষ্কার হয়ে যাবে।' দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে এই নিয়ে গ্রেফতার করা হল ২ জনকে।


দত্তপুকুর কাণ্ডের পরে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি হিমাদ্রি ডোগরাকে সাসপেন্ড করেছিল প্রশাসন। বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে নির্দেশ অমান্য করায় শাস্তি হয়েছিল, খবর সূত্রের। দত্তপুকুর (Duttapukur) থানার নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব নেন সঞ্জয় বিশ্বাস। সাসপেন্ড করা হয়েছিল দত্তপুকুর থানার আইসি-কেও। নীলগঞ্জ এলাকায় বহু বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে। এখানে বহু মানুষের রুটিরুজি বাজি তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এই এলাকাতেই বেআইনি বাজি তৈরির কারখানা চলার অভিযোগ উঠেছিল বারবার। কোথাও বাজি তৈরির আড়ালে বিস্ফোরক তৈরির কাজও চলছিল বলে অভিযোগ। এই এলাকায় কড়া নজরদারির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জেলা পুলিশের তরফে। কোথাও বেআইনি বাজি বা বোমা তৈরি করা হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ওই ওসি সেই নির্দেশ ঠিকমতো পালন করেননি। সেই কারণেই তাঁকে ক্লোজ করে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।


আরও পড়ুন: 'নওশাদ জঙ্গি সংগঠনের নায়ক ', বিস্ফোরক শওকত মোল্লা