গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ডায়মন্ড হারবার পুরসভার (Diamond Harbour Municipality) পর এবার সাগরের (Sagar) মুড়িগঙ্গা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত! ফের দু'টি গ্রামের পাইপলাইনের (Pipeline Water) জলে কেঁচো (Earthworm) মিলল। গত দু’‌দিন ধরে সাগরে শীলপাড়া ও হেঁদোলকেটকি গ্রামের পাইপলাইনের জলের সঙ্গে জীবন্ত কেঁচো বের হচ্ছে। পানীয় জলে কেঁচো বের হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার কয়েক’‌শ পরিবার।


কী ঘটেছিল?
সুন্দরবনের এই এলাকার পুকুরের জল নোনা। টিউবওয়েলগুলিও বেশ দূরে। তার উপর গ্রীষ্মে জলকষ্ট আরও বেড়েছে। ফলে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের দেওয়া পাইপলাইনের জলই ভরসা এলাকার বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে জলের সঙ্গে কেঁচো বের হওয়ায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন। স্থানীয় কচুবেড়িয়া জলপ্রকল্পের অধীন এটি। বামনখালি থেকে পাম্প হাউসের মাধ্যমে প্রত্যেক দিন সকাল ও বিকেলে এই জল সরবরাহ করা হয়। এই খবর জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শান্তনু জানা। তিনি বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের নজরে আনবেন। অন্য দিকে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কাকদ্বীপ মহকুমার অ্যাসিন্টেট ইঞ্জিনিয়ার অরুণ হালদার জানান, এটি ভূর্গভস্থ জল। এরকম হওয়ার কথা নয়। এলাকায় আধিকারিকরা যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।


বছরদুয়েক আগে এক ঘটনা পাঁশকুড়ায়...
বছরদুয়েক আগে কল খুলতেই জলের সঙ্গে বেরিয়ে আসছিল কেঁচো, শ্যাওলা। কিন্তু কোনও উপায় না পেয়ে সেই জলই পান করতে হয় পাঁশকুড়ার একটি গ্রামের বাসিন্দাদের। যদিও এই ঘটনা জানাই ছিল না বলে দাবি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। এক নজরে দেখে মনে হবে যেন, আতস কাচের তলায় থাকা কোনও জীবাণু। কিন্তু আদতে তা একেবারেই নয়। বরং বাস্তবটা আরও উদ্বেগের। বছরের পর বছর কল খুললেই, জলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই সমস্ত কেঁচো, পোকা। আর বাধ্য হয়েই এই জল তাঁদের মুখে তুলতে হচ্ছিল। এমনটাই অভিযোগ, পাঁশকুড়ার নস্করদিঘির বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের বক্তব্য সকাল এবং বিকেলে মাত্র দু-ঘণ্টা করে মেলে পানীয় জল। যা নিতে লাইন পরে যায় গ্রামবাসীদের। কিন্তু, এত  কষ্টের পরেও স্বস্তি নেই। তারপরও মেলে এই দূষিত জল। পাঁশকুড়ার নস্করদিঘি বাসিন্দারা বলেছিলেন, 'কয়েক বছর ধরে এরকম চলছে, কেঁচো বেরচ্ছে, স্থানীয় পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি কোনও লাভ হয়নি।' একটা গোটা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর তাঁরা দূষিত জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ সেই খবরটাই না কি ছিল না পঞ্চায়েত সমিতির কাছে। পাঁশকুড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মালিক বলেন, “ আগে কেউ জানায়নি, আপনাদের মাধ্যমে খবর পেলাম, ওখানকার পঞ্চায়েতকে জানাচ্ছি, পুরসভাকে বলে যাতে জলের ট্যাঙ্ক পৌঁছনো যায়, তার ব্যবস্থা করছি।“


আরও পড়ুন:চাকরি-ব্যবসা ঘুরে হাত নিয়োগ দুর্নীতিতে! একাই তুলেছিলেন ১০০ কোটি?