ঋত্বিক প্রধান, পটাশপুর (পূর্ব মেদিনীপুর): ২৬ দিন পার - এখনও পটাশপুরের ৬২টি গ্রাম জলের তলায়। এরই মাঝে আগমনীর বার্তা নিয়ে দুয়ারে এসে হাজির সেরা উৎসব - দুর্গা পুজো। আর এই দুর্গা পুজোতে বন্যা কবলিত পটাশপুর এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছতে মরিয়া নেতা থেকে প্রশাসনিক কর্তারা।


দুয়োরে পুজো অথচ দুঃখে পটাশপুর। এখনও জলবন্দি পূর্ব মেদিনীপুরের এই ভূখণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, কেলেঘাই নদীর জল নামতে ২-৩ দিন পেরিয়ে যাবে। অতএব পুজো কাটবে প্লাবনের মধ্যে। 


পুজোয় মুখে প্লাবনের ঘোলা জলে যেন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়।  কারণ এই জলের সঙ্গেই মিশে রয়েছে এলাকার বানভাসি মানুষের দীর্ঘশ্বাস আর কষ্ট। এক বাসিন্দা বললেন, এবার পুজো জলেই কাটবে। শুকনো খাবার যা আসছে, সেটুকুই পাচ্ছি। তাই খাচ্ছি। 


আরও পড়ুন: এখনও বাঁকড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় জমে জল, যাতায়াতের ভরসা ভেলা


আজ দেবীপক্ষের ষষ্ঠী। আজ দুর্গা বোধন। কিন্তু, পটাশপুরের জলবন্দি জায়গাগুলিতে যেন বিসর্জনের বিষাদের সুর। বহু ঘর, সংসার ডুবে রয়েছে জলের তলায়। 


গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কেলেঘাই নদীর জল ঢুকতে শুরু করে পটাশপুরে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নদীবাঁধ সম্পূর্ণ মেরামত না হওয়ায়, এখনও জল ঢুকছে গ্রামে। 


প্রায় চার সপ্তাহ হতে চলল। এখনও প্লাবিত পটাশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাজকুল-পটাশপুর প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে কয়েকদিন আগও বয়েছে জল।


এলাকাবাসীর আশঙ্কা, এখনও যে পরিমাণ জল জমে রয়েছে, তা নামতে কম করে ২-৩ দিন সময় লাগবে। অর্থাৎ এবারের পুজো জলবন্দি হয়েই কাটাতে হবে তাঁদের। 


আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ, কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পটাশপুর


পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক বলেন, এখনও আমার এলাকার প্রায় ৬৫টি গ্রাম জলের তলায়। এটা নামতে আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে। আমরা জানি এই সময় বাংলা জুড়ে চলছে দুর্গোৎসব। কিন্তু এই সমস্ত বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজনের কাছে তার আনন্দ পৌঁছাবে না। তাই আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই সময় অন্তত কারোর ত্রাণের অভাব না হয়। 


অপরদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি জানিয়েছেন, আপাতত কেলেঘাই নদীর বাঁধ মোটামুটি সারাই করা হয়েছে। এর ফলে, এলাকায় জল ঢোকা বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করছি দু-তিন দিনের মধ্যে আরও বেশ কিছু এলাকা থেকে জল নামবে।