আবির দত্ত, কলকাতা: রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (partha chatterjee) ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (manik bhattacharya) একে অন্যকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন, চাঞ্চল্যকর দাবি ইডি-র (ED)। প্রতারণার (recruitment scam) সঙ্গে দুজনেই সরাসরি জড়িত, আরও সংযোজন এই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের। এতেই শেষ নয়। ইডির বক্তব্য, বেশ কিছু বি.এড এবং বি.এল.এড কলেজকে এনওসি পাইয়ে দিয়ে তাঁরা লাভবান হয়েছিলেন। 


ইডির সওয়াল...
এদিন এই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের তরফে সওয়াল করা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেলে নিজের প্রভাব খাটাতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি বিচারপ্রক্রিয়ার থেকে পালাতেও পারেন। সওয়ালের সময় ম্যাকবেথের লাইনও উদ্ধৃত করেন ইডির আইনজীবী। প্রাক্তন মন্ত্রীর তরফে পাল্টা দাবি ছিল, ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে ইডি। এতেই শেষ নয়। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় যে তাঁর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না, সেই অভিযোগও আনেন পার্থ। আসে তাঁর ও মানিক ভট্টাচার্যের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে পার্থর জেল হেফাজতের আর্জি জানানো হয়। এদিনই আবার সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় আলিপুর আদালতে এসেছিলেন পার্থ। এসেছিলেন অর্পিতাও। শুনানি চলাকালীন কেঁদে ভাসান তিনি। বস্তুত, কখনও বিহ্বল, কখনও আবার কাতর- নানা মেজাজেই এদিন দেখা গিয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীকে।


কী বললেন? 
পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারের পর তাঁর মন্ত্রিপদ কেড়েছে দল। মহাসচিবের পদ থেকেও সরিয়ে দিয়েছে। দলের সব পদ থেকে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু, গরু পাচার অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরও বীরভূমের জেলা সভাপতি পদে তাঁকে বহাল রেখেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকি চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরও, রাজু সাহানিকে অবধি হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরায়নি তৃণমূল। তার পরও আজ পার্থকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘দলের সঙ্গে আছি। একশোবার আছি।’ সম্প্রতি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী প্রসঙ্গে সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, 'পার্থ দলের বিড়ম্বনা।' এই প্রেক্ষাপটেই সোমবার তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবকে সৌগত রায়ের মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনই জবাব,'দলের সঙ্গে আছি।' কিন্তুপার্থ দলের সঙ্গে থাকলেও, দল কি তাঁর সঙ্গে আছে? প্রশ্নটা উঠছে তৃণমূলেরই বিশেষ কয়েকটি সিদ্ধান্তের জেরে! এদিন ED’র মামলায় ব্যাঙ্কশাল আদালতেও জামিনের জন্য কাতর আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলেন,'আমার শরীর দিচ্ছে না। সব কেস একসঙ্গে আনা হয়েছে। কিছুই পাওয়া গেল না, তাও এরকম চাপ দেওয়া হচ্ছে। ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে বাঁচতে দিন।' 
সব মিলিয়ে সোমবার রীতিমতো বিধ্বস্ত দেখায় তাঁকে।


আরও পড়ুন:আমার শরীর দিচ্ছে না', পার্থর আবেদন খারিজ আদালতে, বাড়ল জেল হেফাজতের মেয়াদ