প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : গরুপাচারকাণ্ডে (Cow Smuggling case) গ্রেফতার করার পর এবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) তোড়জোড় শুরু করল ইডি। অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর কন্যা-সহ একাধিক ঘনিষ্ঠের কোটি কোটি টাকার উৎস কি, সেটা জানতে বীরভূমের তৃণমূল নেতা সভাপতিকে তিহাড় জেলে নিয়ে গিয়ে তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনাও সামনে উঠে আসছে।


অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাতে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে অনুব্রত মণ্ডলকে সশরীরে হাজির করানোর আবেদন করছে ইডি। প্রসঙ্গত, মেয়ের জিজ্ঞাসাবাদের উত্তরই কি ইডির অস্ত্র? ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নই। এদিকে এদিন জেলে অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করলেন তাঁর আইনজীবীরা। 


মেয়ের উত্তরই অস্ত্র ? অনুব্রত মণ্ডলের কন্য সুকন্যা মণ্ডলের সম্পত্তির উৎস কি জানতে তাঁকে বেশ কয়েকবার জেরা করেছে ইডি। যেখানে প্রত্যেকবারই তিনি সম্পদ ও সম্পত্তির সমস্ত হিসেব-নিকেষের দিকটা অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারি দেখতেন বলেই জানিয়েছেন। অনুব্রত-র তরফেও দাবি কার্যত একইরকম।


যদিও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মনীশ কোঠারী বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডল তাঁর কাছে যা হিসেব পাঠাতেন সেটা দেখে সই করে দিতেন তিনি। এরপরই অনুব্রত কন্যা ও হিসাবরক্ষকের বক্তব্যকে অস্ত্র করে এগোতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের দাবি, গরুপাচারকাণ্ডের মানি লন্ডারিং তথা এক জায়গার টাকা অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল এভাবেই।


তথ্য গোপনের অভিযোগে গ্রেফতার-  ইডি সূত্রে খবর,  অনুব্রতকে জেরার জন্য ৪ পাতার প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। বেশিরভাগ প্রশ্নই ছিল মূলত বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তি সংক্রান্ত। যেমন - তাঁর নামে যে বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, তার উৎস কী? অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা জমা পড়ল কোথা থেকে? এর সঙ্গে কি গরু পাচারের টাকার কোনও যোগ আছে?  ইডি সূত্রে দাবি, এদিনের জেরার উদ্দেশ্য ছিল গরু পাচারের টাকা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে এসেছে কি না এবং সেই টাকায় বেনামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে কি না, সেবিষয়ে তথ্য জোগাড় করা।  ED-র আরও দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টেন্ট মণীশ কোঠারি তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে যা নথি আসত, তিনি শুধুমাত্র অডিট করে দিতেন। কিন্তু ED সূত্রে দাবি, দিন জেরায় অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, তিনি কিছু জানেন না। যা বলার বলতে পারবেন মণীশ। আর তখনই ED’র মনে হয়, অনুব্রত মণ্ডল তথ্য গোপন করতে চাইছেন। তারপরই তাঁকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন- বাঘ না বাঘরোল ! ১১০ কেজি ওজন ৭৫ কেজি হয়ে যাবে, অনুব্রতকে দিলীপের কটাক্ষ