কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: জামুরিয়ায় বিজেপি নেতা (Jamuria BJP Leader Murder) খুনে এবার সিবিআই (CBI Investigation)তদন্তের দাবি তোলা হল পরিবারের তরফে।নিহত রাজেন্দ্র সাউয়ের পকেটে থাকা ৫ লক্ষ টাকাও উধাও বলে দাবি পরিবারের। নিহত কর্মীর বাড়িতে গেলেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul)।
যা জানা গেল...
জামুড়িয়া শুটআউটকাণ্ডে ৪৮ ঘণ্টা পেরোলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। খুনের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে পরিবার। গত ২৯ এপ্রিল বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র সাউকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। আসানসোল পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির আহ্বায়ক ছিলেন রাজেন্দ্র। শনিবার বিকেলে জাতীয় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা স্করপিও গাড়ির ভিতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রাজেন্দ্রকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই পুলিশি তদন্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে পরিবারের তরফে। নিহত বিজেপি নেতার ভাই জিতেন্দ্র সাউ সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, 'সিবিআই তদন্তের দাবি। তদন্তের নামে পুলিশ মৃতের পরিবারকেই বিব্রত করছে। এমনকি রাজেন্দ্রর কাছে থাকা পাঁচ লক্ষ টাকারও কোন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।' আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অবশ্য জানিয়েছেন, পরিবারকে কোনওভাবেই বিব্রত করা হচ্ছে না। তদন্তের স্বার্থে যেটুকু করার দরকার সেটাই করা হচ্ছে। মৃতের কাছ থেকে কোন টাকা উদ্ধার হয়নি। সোমবার রানিগঞ্জের নিহত বিজেপি নেতার বাড়িতে যান অগ্নিমিত্রা পাল। সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনিও। গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। বলেছেন, 'গত দু মাসে ন টা খুন হয়েছে আসানসোলে । একটারও কিনারা করতে পারেনি । এই পুলিশ শুধু টাকা তুলতে ব্যস্ত । অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব।' তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, 'একটা ঘটনা ঘটেছে । পুলিশ তদন্ত করছে । যে দোষী সে ধরা পড়বেই । সিবিআই রাজ্যে এতগুলো তদন্ত করছে একটাতেও সাজা হয়েছে? সব মিলিয়ে তদন্ত কোন পথে এগোয় সেদিকেই সবার নজর।
কী ঘটেছিল?
মাত্র ২৫ সেকেন্ডের নিখুঁত অপারেশন। শক্তিগড়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলিতে ঝাঁঝড়া হয় দুর্গাপুরের কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা। সেই ঘটনার একমাসের মধ্যেই দিনেদুপুরে শুটআউট হল জামুড়িয়ায়। জাতীয় সড়কে গুলি করে খুন করা হন বিজেপি নেতাকে। তাঁর নাম রাজেন্দ্র কুমার সাউ। বাড়ি রানিগঞ্জে। আসানসোল পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির আহ্বায়ক রাজেন্দ্র। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নিহত ব্যক্তি জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শনিবার দুপুরে জামুড়িয়ার বোগরা এলাকায়, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নির্জন জায়গায় দীর্ঘক্ষণ এই সাদা গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। সন্দেহ হওয়ার গাড়ির কাছে যান স্থানীয়রা। তখনই দেখা যায়, গাড়ির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। এরপরই, পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তারাই মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতের পরিবারের দাবি, যে গাড়িতে দেহ উদ্ধার হয়েছে সেটি রাজেন্দ্রর নয়। এই গাড়ির মালিককে মোটা অঙ্কের টাকা ধার দিয়েছিলেন রাজেন্দ্র। টাকা ফেরত না পাওয়ায়, গাড়িটি নিয়ে চলে আসেন তিনি। গত ১৫ দিন ধরে, এই টানাপোড়েন চলছিল। খুনের নেপথ্যে, কোনও ব্যবসায়িক শত্রুতা, নাকি অন্য কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কিন্তু পর পর একই ধরনের ঘটনা ঘটায় প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকাও।
আরও পড়ুন:গরমে সুস্থ থাকতে মানতেই হবে কোন কোন নিয়ম? রইল টিপস